৯৯ শতাংশ ভোট পড়া বাস্তবসম্মত না: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো. নূরুল হুদা। ফাইল ছবি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো. নূরুল হুদা। ফাইল ছবি

কোনো ভোটকেন্দ্রে ৯৯ শতাংশ ভোট পড়ার বিষয়কে ‘বাস্তবসম্মত’ বলে মনে করেন না প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। রাজবাড়ীতে আজ মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

আজ রাজবাড়ী সদর উপজেলার ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিইসি। অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে দেন। আজ বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ অনুষ্ঠান হয়।

সিইসি বলেছেন, ‘কোনো কেন্দ্রে ৯৯ শতাংশ ভোট পড়ার বিষয়টি আমি বাস্তবসম্মত বলে মনে করি না।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী-২ আসনের বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের নটাপাড়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিলেন ২ হাজার ৮৬। ভোট পড়ে ২ হাজার ৮৫। ওই কেন্দ্রে মাত্র একজন ভোটার অনুপস্থিত দেখানো হয়।

সিইসি বলেন, ‘ভোট গণনা হয়ে যাওয়ার পর ফলাফল ঘোষণা হয়ে গেলে নির্বাচন কমিশনের আর করার কিছু থাকে না। তখন আদালতে যেতে হয়।’

সম্প্রতি শেষ হওয়া উপজেলা নির্বাচনে কম ভোটার উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে নূরুল হুদা বলেন, ‘নির্বাচনগুলোতে বড় দল না থাকায় ভোটার কিছুটা কমেছে।’ তবে সিইসি বলেন, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছেন। এ কারণে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সবার সহযোগিতার কারণে একটি চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘রোহিঙ্গারা ভোটার হতে পারবে না। তারা আমাদের দেশে আসার পরেই তাদের হাতের ছাপ নেওয়া হয়েছে। এতে করে ভোটার হতে গেলে হাতের ছাপ দেওয়ার সময় তারা ধরা পড়বে। সুতরাং নিজের পরিচয় গোপন করেও তাদের ভোটার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

রাজবাড়ী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আবদুল জব্বার বলেন, এবারের উপজেলা নির্বাচনের মতো সব নির্বাচন হলে মানুষ ভোট দিতে আসত। প্রশাসন এবার যেভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে, তা সব সময় করলে ভালো হতো। মানুষ একদিন সঠিক প্রার্থী বাছাই করবে, সে দিন আর বেশি দূরে নয়।

জেলা প্রশাসক মো. শওকত আলী বলেন, ‘আমরা এখন ছবিযুক্ত ভোটার তালিকার যুগে বাস করছি। ছবিযুক্ত ভোটার তালিকার কারণে একজনের ভোট অন্যজন দিতে পারছে না। যা ভোট কাস্টিং হচ্ছে, তা প্রকৃত ভোট।’
পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বলেন, ‘এনআইডি কার্ড পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তৃণমূল পর্যায়ে এ বিষয়ে কমিউনিটি পুলিশের মাধ্যমে তথ্য পৌঁছে দেব। ইউনিয়ন থেকে এই কাজ শুরু করতে হবে। সবার সমন্বিত চেষ্টার মাধ্যমে নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করা সম্ভব হবে।’
সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক বিশ্বাস বলেন, ‘একজন সাংসদ নির্বাচনের আগে তাঁর সম্পদের পরিমাণ জমা দেন। কিন্তু তিনি সাংসদ বা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর তাঁর সম্পদ কী পরিমাণ দাঁড়াল তার কোনো হিসাবে থাকে না। বিষয়টি আপনাদের বিবেচনায় রাখতে হবে।’

আলোচনা শেষে এক শিক্ষার্থীকে নতুন ভোটার করা হয়। এরপর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়।

আজকের অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুম রেজা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ফরিদপুর আঞ্চলিক কর্মকর্তা নুরুজ্জামান তালুকদার।