বিএনপি নেতা হত্যার প্রধান আসামি ঢাকায় গ্রেপ্তার

আমিনুল ইসলাম
আমিনুল ইসলাম

বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, পরিবহন ব্যবসায়ী ও আইনজীবী মাহবুব আলম হত্যা মামলার প্রধান আসামি আমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

সন্ধ্যায় মুঠোফোনে জানতে চাইলে বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, রাজধানীর মতিঝিল থানা–পুলিশের সহযোগিতায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমবার হোসেনের নেতৃত্বে বগুড়া জেলা পুলিশের একটি দল আমিনুলকে গ্রেপ্তার করে।

আমিনুল ইসলাম বগুড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র, বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক এবং সদর উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি। তিনি ঢাকা-উত্তরবঙ্গ রুটে চলাচলকারী শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালকও।

১৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়া শহরের উপশহর বাজারের ১০ তলা বিল্ডিং এলাকায় বিএনপি নেতা মাহবুব আলমকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মাহবুবের স্ত্রী আকতার জাহান বাদী হয়ে ১৬ এপ্রিল সদর থানায় ১১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এতে আমিনুল ইসলামকে প্রধান আসামি করা হয়।

পুলিশ বলছে, এ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা পায়েল শেখ ও রাসেল নামের দুই আসামি ইতিমধ্যে বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বিল্লাল হোসাইনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। স্বীকারোক্তিতে দুজনই উল্লেখ করেছেন, জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জেরে বিএনপি নেতা মাহবুব আলমকে হত্যা করা হয়েছে। মোটর মালিক গ্রুপের এক ‘বড় ভাই’–এর নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ডে ১২ জন অংশ নেন।

মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী আরও বলেন, মাহবুব আলম হত্যাকাণ্ডের পর গা ঢাকা দেন মোটর মালিক গ্রুপের নেতা আমিনুল। এ মামলায় গ্রেপ্তার আসামি পায়েল ও রাসেল আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আমিনুলের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ কারণে তাঁকে গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক দল মাঠে নামে। এ হত্যাকাণ্ডে আমিনুলের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিএনপি নেতা মাহবুব হত্যাকাণ্ডের পর থেকে খুনিদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জেলা বিএনপি এবং জেলা আইনজীবী সমিতি শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধনসহ লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও নিহত এই নেতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে এসে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।