বিতর্ক থাকলেও চালু হবে ইভিএম: সিইসি নূরুল হুদা

ফরিদপুরে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসি নূরুল হুদা। ছবি: প্রথম আলো
ফরিদপুরে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসি নূরুল হুদা। ছবি: প্রথম আলো

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘অনেক সমালোচনা ও বিতর্ক হচ্ছে, আগামী দিনেও হবে। এরপরও নির্বাচনে দেশের প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যবহার করা হবে ইভিএম।’ আজ বুধবার ফরিদপুরে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসি এ কথা বলেন।

ফরিদপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা।

নূরুল হুদা বলেন, ‘অনেক সমালোচনা হচ্ছে ও হবে। এরপরও ইভিএম থেকে ফিরে আসব না। ইভিএম চালু হবে সব ভোটকেন্দ্রে। নির্বাচনব্যবস্থাকে ডিজিটাল রূপ দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’ ইভিএম চালু হলে অনেক সমস্যা কমে যাবে, দুর্নীতি কমে যাবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

স্মার্ট কার্ডকে জাতির জীবনে একটি বিরাট অর্জন হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, এটি মূলত একটি তথ্যভান্ডার হয়ে উঠবে। এই তথ্যভান্ডারে ওই ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য মজুত থাকবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ৪৬ জনের হাতে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র তুলে দেন তিনি।

এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. সাইফজ্জামান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মৃধা, ফরিদপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. সাইফুজ্জামান, ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক মোল্লা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা নূরুজ্জামান তালুকদার। উপস্থাপনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, ‘ফরিদপুরে পাঁচটি সংসদীয় আসন ছিল। এই পাঁচটি সংসদীয় আসন পুনরায় ফিরে আসা উচিত বলে আমি মনে করি। সারা দেশ থেকে পাঁচটি আসন কমিয়ে ঢাকায় আসনসংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল। এ কাজটি ঠিক হয়নি। আগামী ২০২১ সালের আদমশুমারির পর আমরা যদি কাজ করতে পারি, তাহলে পূর্বের সংসদীয় আসনগুলো পূর্বের জায়গায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে নূরুল হুদা বলেন, ‘অনেক দেশ ইভিএম চালু করে বাদ দিয়েছে। এসব নির্ভর করে নিজ নিজ দেশের বাস্তবতার ওপর। অন্য দেশের বাস্তবতা একরকম, আমাদের দেশের বাস্তবতা আরেক রকম।’ তিনি আশ্বাস দেন, ‘ইভিএম মেশিনে এক বাটনে চাপ দিলে সব ভোট এক মার্কায় যোগ হওয়ার সুযোগ নেই। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই সব করা হবে। আপনারা সবই দেখতে পাবেন।’

সিইসি জানান, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনেক কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে—এটা একটি অসম্ভব প্রক্রিয়া। ভোটার কম উপস্থিতির বিষয়ে উপজেলা নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল যোগ না দেওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হওয়ায় নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ কমে গেছে—নির্বাচন কমিশনের সচিবের এ বক্তব্য সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, উন্নত দেশে ভোটকেন্দ্রে বেশি ভোটার উপস্থিতি লক্ষ করা যায় না। এমনকি ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ায় জরিমানার ব্যবস্থা করেও কেন্দ্রে ভোটার আনা যায় না।

নূরুল হুদা জানান, ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম ঠেকাতে ভোটের দিন সকালবেলা প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ব্যালট বাক্স সরবরাহ করার বিষয়টি চিন্তা করেছিল কমিশন। পরে দেখা গেছে এটি কার্যত বাস্তবসম্মত নয়, তাই বাদ দেওয়া হয়েছে।