দুর্নীতির মামলায় ২০ বছর পর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা কারাগারে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলার পলাতক আসামি নড়াইল ট্রাফিক বিভাগের সাবেক (বরখাস্ত) সার্জেন্ট রফিকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। প্রায় ২০ বছর পলাতক থাকার পর গতকাল বুধবার আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে এ নির্দেশ দেন।

১৯৯৯ সালের ১ আগস্ট নড়াইল শহরে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার শাহিনুর রহমান। ছিনতাইকারীদের কবল থেকে বাঁচতে তিনি আশ্রয় নেন নড়াইলে ট্রাফিক বিভাগের কর্তব্যরত সার্জেন্ট রফিকুল ইসলামের কাছে। সে যাত্রায় ছিনতাইকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেলেও ওই সার্জেন্টের খপ্পরেই পড়েন তিনি। কাগজপত্র যাচাইয়ের কথা বলে মোটরসাইকেলটি নিজের কবজায় নিয়ে নেন সার্জেন্ট রফিকুল ইসলাম। পরে মোটরসাইকেল ফিরে পেতে আদালতে মামলা করেন শাহিনুর রহমান।

দুর্নীতি দমন কমিশনের কৌঁসুলি সিরাজুল ইসলাম বলেন, আসামি রফিকুল ইসলাম পুলিশের সাবেক সার্জেন্ট। তিনি খুলনা শহরের তালতলা মসজিদ এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে। প্রায় ২০ বছর পলাতক থাকার পর গতকাল বুধবার স্পেশাল জজ আদালতে হাজির হয়ে তিনি জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বাঘারপাড়া উপজেলার মাহমুদ আলীপুর গ্রামের শাহিনুর রহমান ১৯৯৮ সালে স্ট্যাম্পে এফিডেভিটের মাধ্যমে একই উপজেলার কামরুল ইসলামের কাছ থেকে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি মোটরসাইকেল কেনেন। সেই মোটরসাইকেলে নড়াইল শহরে বেড়াতে যান শাহিনুর রহমান। এ সময় তিনি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট রফিকুল ইসলামের কাছে আশ্রয় নিয়ে সেই যাত্রায় ছিনতাইকারীর হাত থেকে রক্ষা পান তিনি।

এরপর পুলিশ সার্জেন্ট রফিকুল ইসলাম মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে নেন। তিনি মালিক শাহিনুর রহমানকে কাগজপত্র দেখাতে বলেন। সঙ্গে কাগজপত্র না থাকায় তিনি তা দেখাতে পারেননি। সার্জেন্ট তাঁকে কাগজপত্র দেখিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে নিয়ে যেতে বলেন। পরে তিনি কাগজপত্র নিয়ে গেলেও সার্জেন্ট রফিকুল ইসলাম মোটরসাইকেল ফেরত দেননি।

মোটরসাইকেল ফিরে পেতে শাহিনুর রহমান নড়াইলের প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরোকে তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০০৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর জেলা দুর্নীতি দমন কর্মকর্তার নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পান পরিদর্শক মোহাম্মদ মোস্তফা। এদিকে মামলা চলাকালে নড়াইল শহর থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে পুলিশ। থানা থেকে শাহিনুর রহমান তাঁর মোটরসাইকেলটি ফিরে পান।

পরে দুর্নীতি দমন ব্যুরো বিলুপ্ত হলে দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক আমিনুর রহমান মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান। তিনি ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে সার্জেন্ট রফিকুল ইসলাম মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়।