ভুয়া লাইসেন্সে অস্ত্র ক্রয় মামলা: ৬০ জন কারাগারে

রংপুরে ভুয়া লাইসেন্সে অস্ত্র কেনার মামলায় সাবেক ৬০ সেনাসদস্যকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রংপুরের জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে এই আদেশ দেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আসামিরা রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জুডিশিয়াল মুনশিখানা (জেএম) শাখার অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক শামসুল ইসলামের মাধ্যমে অস্ত্রের ভুয়া লাইসেন্স করে অস্ত্র ক্রয় ও বহন করেছিলেন। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল মালেক জামিন নামঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী শামসুল জালিয়াতির মাধ্যমে অস্ত্রের ভুয়া লাইসেন্স তৈরি করে দিতেন। এ জন্য তিনি লাইসেন্স গ্রহণকারীদের থেকে জনপ্রতি ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা নিতেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে শামসুল ইসলাম গা ঢাকা দেন। এই ঘটনায় ২০১৭ সালের মে মাসে কোতোয়ালি থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক মামুনুর রশীদ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা করেন।

পিপি আবদুল মালেক জানান, মামলার পর র‌্যাব-১৩-এর সদস্যরা ২০১৭ সালের জুলাই মাসে অভিযুক্ত শামসুলকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন শামসুল। আবদুল মালেক আরও বলেন, এই মামলায় ২৮১ ব্যক্তিকে আসামি করে গত বছর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখতারুল আলম। আসামিদের অধিকাংশই সাবেক সেনাসদস্য। তাঁদের মধ্যে ৬০ সাবেক সেনা সদস্য আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক শুনানি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে কঠোর পুলিশি পাহারার মধ্য দিয়ে আসামিদের কারাগারে নেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসন ও মামলা সূত্রে আরও জানা গেছে, শামসুল ইসলাম ২০১৭ সালের ১৬ মে থেকে অফিসে আসা বন্ধ করে দিয়ে গা ঢাকা দেন। তাঁর বাড়ি রংপুর নগরের খোর্দ্দ তামপাট এলাকায়। ২০১৭ সালের ১৭ মে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান অভিযুক্ত ওই কর্মচারীর কক্ষের আলমারির তালা ভাঙেন। এতে ওই আলমারিতে নগদ ৭ লাখ ১০০ টাকা, শামসুলের নিজের নামে ১১ লাখ (একটি পাঁচ লাখ ও অপরটি ছয় লাখ) টাকার দুটি এফডিআর এবং দুই লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ইস্যুকৃত অবৈধ লাইসেন্স জব্দ করা হয়।