জামায়াতের চেয়েও পিছিয়ে আ.লীগ

দ্বিতীয় দফা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে আরও পিছিয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ। ১১২টি উপজেলার মধ্যে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী ৩৫টি, জামায়াত ৩২টি ও আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী ৩০টিতে জয়ী হয়েছেন। সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি-সমর্থিত প্রার্থী মাত্র দুটি উপজেলায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এ ছাড়া খেলাফত মজলিসের দুজন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, জাসদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (সন্তু লারমা) একজন করে প্রার্থী জয় পেয়েছেন। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এমন পাঁচ প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই ও বিএনপির এক ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী।

গত বৃহস্পতিবার ৫২টি জেলার ১১৫টি উপজেলায় ভোট নেওয়া হয়। কিন্তু সহিংসতার কারণে নোয়াখালী সদর উপজেলায় ভোট গ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ছয়টি ও জামালপুরের মেলান্দহে দুটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত আছে। এ কারণে ওই দুটি উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফলাফল পাওয়া যায়নি।

বিএনপির ৩৫ জন: রংপুরের বদরগঞ্জে সাইদুল ইসলাম, নওগাঁর আত্রাইয়ে ইকরামুল বারী ও নিয়ামতপুরে মো. লিয়াকত হোসেন, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে রুহুল আমিন, লালমনিরহাট সদরে মহিউদ্দিন আহমেদ, হাতীবান্ধায় এ এস এম শামসুজ্জামান, দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে নূর আলম সরকার ও বিরামপুরে দেলোয়ার হোসেন মোল্লা, বগুড়ার শাজাহানপুরে জহুরুল ইসলাম, মেহেরপুরে মুজিবনগরে জারজিস হুসাইন, ফরিদপুরের সালথায় আসাদ মাতব্বর, ঢাকার কেরানীগঞ্জে রুহুল আমীন ও সাভারে দেওয়ান মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন, রাঙামাটির নানিয়ারচরে রনবিকাশ চাকমা, ঝিনাইদহের মহেশপুরে আবদুল আহাদ, যশোরের বাঘারপাড়ায় নাসির হায়দার, নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে মির্জা পারভেজ ও বারহাট্টায় আবদুল আউয়াল, পাবনার চাটমোহরে আরজ খান ও ভাঙ্গুরায় জাফর ইকবাল, নাটোর সদরে আলম আবুল, কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে কামাল হোসেন, মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে সেলিম হোসেন খান নির্বাচিত হয়েছেন।

বান্দরবানের লামায় আবু তাহের, রুমায় জিংসমলিয়ান বম ও রোয়াংছড়িতে ক্যসাইনু মারমা, সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মহসিন উল মুলক, সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে গোলাপ মিয়া, হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে লুৎফর রহমান মহলদার, শেরপুরের ঝিনাইগাতিতে আমিরুল ইসলাম, পিরোজপুরের নাজিরপুরে মোহাম্মদ আলী, ময়মনসিংহ সদরে আশরাফুল আলম ও ঈশ্বরগঞ্জে আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া, টাঙ্গাইলের সখীপুরে সবুর রেজা ও মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে আবুল বাশার জয়ী হয়েছেন।

জামায়াতের ৩২ জন: পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ইকবাল হোসাইন, ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে মিজানুর রহমান, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে কফিল উদ্দিন ও নাগেশ্বরীতে মজিবুল ইসলাম খন্দকার, জয়পুরহাট সদরে হাসিবুল আলম, দিনাজপুরের বীরগঞ্জে এ কে এম কাওসার ও ঘোড়াঘাটে আলমগীর হোসেন, নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মমতাজ উদ্দিন সরকার ও লালপুরে আবুল কালাম আজাদ, চাঁদপুর সদরে শাহাজাহান মিয়াজী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে তাজের হোসেন, নওগাঁর সদরে আ স ম সায়েম, বদলগাছীতে শ ম ফজলুল হক ও পত্নীতলায় হাবিবুর রহমান, বগুড়ার আদমদীঘিতে ইউনুছ আলী ও শিবগঞ্জে আবদুস সামাদ, মাগুরার শালিখায় ইব্রাহীম বিশ্বাস ও মহম্মদপুরে আশরাফ হোসেন, নরসিংদীর শিবপুরে আবদুর রহমান ভূইয়া, কক্সবাজারের পেকুয়ায় নুরুজ্জামান, যশোরের ঝিকরগাছায় জয়নাল আবেদীন, কুমিল্লার দেবীদ্বারে সাইফুল ইসলাম, সুনামগঞ্জের সদরে বদরুল কাদির, নেত্রকোনার পূর্বধলায় মাসুম মোস্তফা, কুষ্টিয়ার খোকসায় আবু বক্কর সিদ্দিক ও কুমারখালীতে আফজাল হোসেন, নোয়াখালীর চাটখিলে মহিউদ্দিন, সোনাইমুড়ীতে শাহাবুদ্দীন, গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে আবু তালেব, মেহেরপুরের গাংনীতে মোস্তাফিজুর রহমান, খুলনার ডুমুরিয়ায় সিরাজুল ইসলাম ও চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় নুরুল আক্তার নির্বাচিত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের ৩০ জন: ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে আবদুস সামাদ, লালমনিরহাটের পাটগ্রামে শফি কামাল, জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে মোস্তাকিম মণ্ডল ও কালাইয়ে সোহরাব আলী, বগুড়ার কাহালুতে সাইফুল ইসলাম, নওগাঁর সাপাহারে আবদুল ওয়াহেদ, সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ফরহাদ হোসেন, যশোরের শার্শায় মেহেদী হাসান, বাগেরহাটের ফকিরহাটে শেখ মিজানুর রহমান ও কচুয়ায় হাজরা ওবায়দুর, বরিশাল সদরে শহীদ শাহনেওয়াজ, পিরোজপুরের কাউখালীতে কামরুজ্জামান, জামালপুরের ইসলামপুরে সফিকুল আলম, নেত্রকোনার কলমাকান্দায় রফিকুজ্জামান, মুন্সিগঞ্জ সদরে আমির হোসেন গাজী, ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে মিজানুর রহমান মৃধা, গোপালগঞ্জ সদরে তাসবিরুল হুদা ও কোটালীপাড়ায় মতিয়ার রহমান হাজরা, মাদারীপুরের শিবচরে বি এম দেলোয়ার হোসেন ও রাজৈরে শান্ত দাস, কুমিল্লার লাকসামে মহব্বত আলী, চাঁদপুরের মতলব উত্তরে আরিফুল ইসলাম ও মতলব দক্ষিণে মো. শওকত আলী দেওয়ান, ফেনী সদরে ফোরকান চৌধুরী ও পরশুরামে এনামুল করিম মজুমদার, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আ জ ম বাদশা ও কবিরহাটে মফিজ উল্লাহ, ময়মনসিংহের ভালুকায় রফিকুল ইসলাম, ভোলার চরফ্যাশনে সাইদুর রহমান ও বোরহানউদ্দিনে রাসেল আহমেদ মিয়া নির্বাচিত হয়েছেন।

জাতীয় পার্টির দুজন: কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে শফিকুল ইসলাম ও জামালপুরের বকশীগঞ্জে এস এম আবু সায়েম নির্বাচিত হয়েছেন।

অন্যান্য দলের পাঁচজন: বান্দরবানের থানছিতে জেএসএসের (সন্তু লারমা) চ সা থোয়াই মারমা, কুষ্টিয়ার মিরপুরে জাসদের বাহাদুর শেখ, মানিকগঞ্জ সদরে খেলাফত মজলিসের মাওলানা মোহাম্মদ শামসুল হক, সিলেটের বালাগঞ্জে খেলাফত মজলিসের আলী আজগর ও চট্টগ্রামের পটিয়ায় বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সৈয়দ আনোয়ার হোসেন পিয়ারু জয়ী হয়েছেন।

তিন ‘বিদ্রোহী’: যশোরের চৌগাছায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী দেবাশীষ মিশ্র, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মো. শের আলম মিয়া ও নাটোরের গুরুদাসপুরে বিএনপির বিদ্রোহী আবদুর রহিম মোল্লা নির্বাচিত হয়েছেন।

দল-নিরপেক্ষ পাঁচজন: ফরিদপুরের নগরকান্দায় মো. আনিসুর রহমান, কক্সবাজারের চকরিয়ায় সিরাজুল ইসলাম, রাজশাহীর বাঘায় শফিউর রহমান, রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে সুব্রত বিকাশ তঞ্চঙ্গা ও খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে অংগ্যপ্রু মার্মা জয়ী হয়েছেন।