শয্যার তিন গুণ রোগী, নেই পর্যাপ্ত ওষুধ

তীব্র গরমে মানুষের মধ্যে জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া ও ঠান্ডাজনিত নানা রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ফলে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। বর্তমানে শয্যার চেয়ে তিন গুণ বেশি রোগী ভর্তি আছে হাসপাতালটির শিশু ও ডায়রিয়া বিভাগে। এতে রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী যেমন ওষুধ দেওয়া যাচ্ছে না, তেমনি সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।

শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের দুটি ইউনিট এবং ডায়রিয়া ওয়ার্ডে সরেজমিনে দেখা যায়, দুটি ওয়ার্ডই রোগীতে ঠাসা। পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় রোগীদের রাখা হয়েছে ওয়ার্ডের ভেতরের ও বাইরের বারান্দার মেঝেতে। রোগীর চাপ এতটাই বেশি যে চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনদের হাঁটাচলার জায়গাও নেই।

শিশু ওয়ার্ডের দুই ইউনিটের মাঝখানের মেঝেতে চিকিৎসাধীন আট মাসের শিশু বিবি খাদিজার মা রুচিয়া খাতুন বলেন, চার দিন আগে মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। মেয়ে এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে সামান্য ওষুধ দেওয়া হয়, আর বাকি ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়। হাসপাতালে রোগী বেশি হওয়ায় ঠিকভাবে সেবা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ জানিয়েছেন আরও অনেকে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শিশু ওয়ার্ডের দুই ইউনিট, ডায়রিয়া ওয়ার্ড ও হাম-জলবসন্তের একটি ইউনিট মিলিয়ে মোট শয্যা আছে ৬০টি। এই সিটের বিপরীতে শুক্রবার রোগী ভর্তি ছিল ২০০ জন। হাসপাতালে সরকারি ওষুধের সরবরাহ পাওয়া যায় সিট অনুপাতে। কিন্তু অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ার কারণে সব রোগীকে চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ দেওয়া যায় না। কিছু ওষুধ রোগীদের বাইরে থেকে কিনতে হয়।

হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার সোহেল সারওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, সর্দি, জ্বর ও পেটের ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০ জন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। এত রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে তাঁরাও হিমশিম খাচ্ছেন।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. খলিল উল্যাহ বলেন, ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে গড়ে প্রতিদিন রোগী থাকে ৫৫০ থেকে ৬০০ জন। কিন্তু সরকারি বরাদ্দ পাওয়া যায় ২৫০ শয্যার হাসপাতালের। চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য জনবলও ২৫০ শয্যার। এ কারণে রোগীর চাহিদা অনুযায়ী সব ওষুধ ও সময়মতো চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবুও কেউ সেবা থেকে বঞ্চিত হয় না।