নরসুন্দা নদীর লেকওয়ের পাশে ফেলা হচ্ছে ময়লা

কিশোরগঞ্জের নরসুন্দা নদীর লেকওয়ের পাশে ফেলা হচ্ছে ময়লা–আবর্জনা। গত বুধবার বড়বাজারের পেছনের নরসুন্দা নদীর পাড়ে। ছবি: প্রথম আলো
কিশোরগঞ্জের নরসুন্দা নদীর লেকওয়ের পাশে ফেলা হচ্ছে ময়লা–আবর্জনা। গত বুধবার বড়বাজারের পেছনের নরসুন্দা নদীর পাড়ে। ছবি: প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জে নরসুন্দা নদীর পাড়ের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য এবং জনসাধারণ যাতে নরসুন্দার পাড় দিয়ে হাঁটতে পারে, সে জন্য কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় লেকওয়ে। কিন্তু সেই লেকওয়ের প্রায় ১ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে যেন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এ জন্য দর্শনার্থীসহ পৌরবাসীকে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নরসুন্দা নদীর পাড় দিয়ে নির্মিত শহরের বড়বাজার থেকে গৌরাঙ্গবাজার সেতু পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার লেকওয়েতে বড়বাজারের ময়লা-আবর্জনা ও জবাই করা পশুর বর্জ্যের দুর্গন্ধে দুর্বিষহ জীবন পার করছেন এলাকাবাসী ও নরসুন্দা লেকে দূরদূরান্ত থেকে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা। ওই ১ কিলোমিটার লেকওয়ে বড়বাজারের পেছনে হওয়ায় বাজারের সব ধরনের ময়লার পলিথিন, পচা কাঁচামালসহ জবাই করা পশুর বর্জ্যে নদীর পাড়ে এমন অবস্থা হয়েছে, যার কোথাও কোথাও হাঁটার উপযুক্ত নয়। প্রতিদিন বাজারের সব ধরনের আবর্জনা এখানে ফেলা হয়। বেকায়দায় পড়ে উৎকট গন্ধে নাক চেপে ধরে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে ওই লেকওয়ে দিয়ে। কেউ একবার এখান দিয়ে এলে দ্বিতীয়বার আর আসতে চায় না। পৌরসভা ময়লা না ফেলার নির্দেশনা দিয়ে সাইনবোর্ড পুঁতে রাখলেও সাইনবোর্ডের নিচে ময়লার স্তূপ করে রাখা হয়।

স্থানীয় সমাজকর্মী মারুফ রহমান বলেন, লেকের পাড়ে এমন অবস্থা হয়েছে যেন দেখে বোঝার উপায় নেই যে কোটি টাকা ব্যয় করে নরসুন্দা নদীর পাড়ের কাজ হয়েছে। ময়লা-আবর্জনা এমনভাবে ফেলা হয়েছে যেন মানুষের কোনো কাণ্ডজ্ঞান নেই। দুর্গন্ধে নাক চেপে চলতে হয়। অথচ কর্তৃপক্ষও যেন এ ব্যাপারে নীরব দর্শক।

কিশোরগঞ্জ বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনী বলেন, প্রতিদিন ব্যবসায়ীরা তাঁদের ময়লা এক জায়গায় স্তূপ করে রাখেন। কিন্তু পৌরসভার গাড়ি সঠিক সময়ে না আসায় বাধ্য হয়ে তাঁরা অন্য কোথাও জায়গা না পেয়ে ওই ময়লা-আবর্জনা নরসুন্দা লেকের ওয়াকওয়ের পাশে ফেলে রাখেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ বলেন, বারবার বড়বাজারের ব্যবসায়ীদের ময়লা-আবর্জনা না ফেলার জন্য বললেও তাঁরা যেন কর্ণপাতই করছেন না। তাঁদের একটুও ধৈর্য সয় না, ময়লার গাড়ি যাওয়ার আগেই তাঁরা সব ময়লা এনে নরসুন্দার পাড়ে ফেলে রাখেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহদী হাসান বলেন, নরসুন্দা নদীর পাড়ে ময়লা ফেলা খুবই অন্যায় কাজ। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।