দুই বছরেও মেরামত হলো না সেতুটি

দিনাজপুর সদর উপজেলার চেহেলগাজী  ইউনিয়েনের কর্ণাই গ্রামের এই সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর দুই বছর আগে সেতুর পাশে সাঁকো নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে সাঁকোটিও বেহাল হয়ে পড়েছে। পাশে ফসলি জমির ওপর দিয়ে বিকল্প রাস্তা দিয়ে চলছে যানবাহন। ছবিটি সম্প্রতি তোলা।  প্রথম আলো
দিনাজপুর সদর উপজেলার চেহেলগাজী ইউনিয়েনের কর্ণাই গ্রামের এই সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর দুই বছর আগে সেতুর পাশে সাঁকো নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে সাঁকোটিও বেহাল হয়ে পড়েছে। পাশে ফসলি জমির ওপর দিয়ে বিকল্প রাস্তা দিয়ে চলছে যানবাহন। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। প্রথম আলো

দুই বছর আগে আকস্মিক বন্যায় ভেঙে গিয়েছিল সেতুটি। এরপর উপজেলা প্রশাসন সেতু ঘেঁষে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেয়। সাঁকোটির অবস্থা বর্তমানে নড়বড়ে। মানুষ তা দিয়ে চলাচল করে না। অন্যের ফসলি জমির ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে মানুষ। সেই হাঁটাপথ এখন গাড়ি চলাচলের মতো প্রশস্ত হয়ে গেছে। কিন্তু সেতুটি সংস্কার বা নতুন করে তৈরি হয়নি। সেতুটি চালু না হওয়ায় দুর্ভোগ ও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে প্রায় ১৬ গ্রামের মানুষ।

সেতুটির অবস্থান দিনাজপুর সদর উপজেলার ১ নম্বর চেহেলগাজী ইউনিয়নের কর্ণাই গ্রামে। ব্রিজের পূর্ব পাশে কর্ণাই পূর্ব পাড়া, দীঘিপাড়া। পশ্চিম পাশে রয়েছে ১৪টি গ্রাম। রয়েছে কর্ণাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসা। এসব এলাকার বিপুলসংখ্যক মানুষকে শহরে যেতে হয় এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো পার হয়ে। সেতুর পশ্চিমে গ্রামের পাশ দিয়ে চলে গেছে পুনর্ভবা নদী। নদী থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। বালু বহনকারী ট্রাক্টরের চালক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০টির বেশি ট্রাক্টর নদী থেকে বালু নিয়ে এই পথ দিয়ে যাতায়াত করে। গত বছর একটি ট্রাক্টর উল্টে গিয়েছিল। প্রায়ই ভ্যান উল্টে যায়। বর্ষার সময় এই পথ দিয়ে যাতায়াত করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

কর্ণাই বাজারের আলু ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আলু, ভুট্টা আর ধানের আবাদ বেশি হয়। কর্ণাই বাজারত আলুর আড়ত আছিল। এইঠেনা ট্রাক লোড হইতো। কিন্তু ব্রিজটা ভাঙ্গি যাবার কারণে এখন ফসলাদি ভ্যানত করি মেইন রোডত নিয়া যায়, তারপর ট্রাকত লোড করোছি।’

ইজিবাইকচালক প্রমথেস চন্দ্র বলেন, প্রতিদিন মালামাল ও মানুষ নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো ও ভাঙা রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাঁদের। মূল সড়ক থেকে ৮-১০ ফুট নিচে কাঁচা রাস্তা দিয়ে কেবল ইজিবাইক কেন, রিকশা–ভ্যান চালানোও কঠিন হয়ে যায়। গতবার বন্যার সময় পানি ওঠায় মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হন। এবারও সেতুটি ঠিক হলো না।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দিনাজপুর কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, সাধারণত ১০ মিটারের বেশি দৈর্ঘ্য হলে সেই সেতুর জন্য ঢাকা অফিস থেকে প্ল্যান পাস করে আনতে হয়। ২০১৭ সালের বন্যায় ১০ মিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের সেতু–কালভার্ট ইতিমধ্যে মেরামত করা হয়েছে। কর্ণাইয়ের ওই সেতুটির দৈর্ঘ্য যেহেতু ১০ মিটারের বেশি, তাই সময় বেশি লাগছে। ইতিমধ্যে প্ল্যান পাস হয়ে এসেছে। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে সেতুটির দরপত্র দেওয়া হবে এবং ৩০ দিনের মধ্যে সেতুর কাজ শুরু হবে।