পরিত্যক্ত স্থান হচ্ছে পার্ক

এই নকশার আদলেই সংস্কার করা হচ্ছে গেন্ডারিয়া পার্ক।
এই নকশার আদলেই সংস্কার করা হচ্ছে গেন্ডারিয়া পার্ক।

বছরখানেক আগেও জায়গাটি ছিল পরিত্যক্ত। ময়লা–আবর্জনায় ঠাসা। মাস ছয়েক আগে সেখানে অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এরই অংশ হিসেবে সেখানে দৃষ্টিনন্দন পার্ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। আগামী মাসেই কাজ শেষ করে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকায় ডিস্টিলারি রোডে স্থাপিত মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন সেন্টারের উত্তর পাশেই নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এই পার্ক। তবে এখনো পার্কটির নাম ঠিক করা হয়নি।

স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ওই জায়গাটি অনেকটা জঙ্গলের মতো ছিল। এটাকে ব্যবহার উপযোগী করার সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী। পুরো কাজ শেষ হলে প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটাতে পারবেন তাঁরা। কারণ, এখান বেশ কিছু বড় বড় গাছ আছে, যা এই পার্কের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, যাত্রাবাড়ী পার্ক, ধলপুর আউটফল স্টাফ কোয়ার্টার পার্ক ও এই গেন্ডারিয়া পার্কটি একটি প্রকল্পের মধ্যে সংস্কার হচ্ছে। এর মধ্যে গেন্ডারিয়ার এই পার্ক সংস্কারে খরচ হচ্ছে মাত্র ৮০ লাখ টাকা। পার্কটির সংস্কারকাজের সার্বিক তত্ত্বাবধান করছে ডিএসসিসির অঞ্চল-৫ (সায়েদাবাদ)।

ডিএসসিসির অঞ্চল-৫–এর উপসহকারী প্রকৌশলী ফরিদুজ্জামান জানান, ১২ কাঠার ওপর নির্মিত এই পার্কটিতে মূল কাজ হচ্ছে হাঁটাপথ নির্মাণ করা। এ ছাড়া সেখানে একটি ক্যাফেটেরিয়া ও শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে আগে থেকেই অনেক গাছপালা থাকায় নতুন করে গাছ লাগাতে হচ্ছে না। তবে সৌন্দর্যবর্ধনে ঘাস লাগানো হবে। সন্ধ্যার পর যাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে স্থানীয় লোকজন সময় কাটাতে পারেন, সে জন্য পর্যাপ্ত আলোকসজ্জাও করা হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ইতিমধ্যে পার্কটিতে হাঁটাপথ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। পার্কের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে একটি ক্যাফেটেরিয়া তৈরি করা হয়েছে। এখন শেষ মুহূর্তের কাজ বাকি। পার্কটিতে খেজুর, নারিকেল, মেহগনি ও সুপারিগাছসহ হরেক রকমের বড় বড় গাছ রয়েছে। পুরো পার্কটি গাছপালায় সমৃদ্ধ। গাছগুলোকে না কেটেই হাঁটাপথ তৈরির মূল কাজ শেষ করা হয়েছে। সেখানে বিশ্রামের জন্য বসার ব্যবস্থাও রয়েছে। কাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার লোক সেখানে এখানে এসে সময় কাটাচ্ছে ও বিশ্রাম নিচ্ছেন। কেউ কেউ বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মেতে উঠেছেন।

পার্কটিতে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা আহমদ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, সদিচ্ছা থাকলে পরিত্যক্ত একটি জায়গাকেও যে চমৎকার একটি কাঠামোর মধ্যে আনা সম্ভব, এই পার্কটি তার অন্যতম উদাহরণ। সংস্কারকাজ শেষ হলে চমৎকার পরিবেশ উপভোগ করার পাশাপাশি অবসর সময়টা অনেক ভালো কাটবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির অঞ্চল-৫–এর নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীল প্রথম আলোকে বলেন, পার্কের মধ্যে থাকা গাছগুলোকে রেখেই এর নকশা করা হয়েছে। সংস্কারের মূল কাজ শেষ হয়েছে। এখন টাইলস বসালেই কাজ শেষ হবে। জায়গা ছোট হলেও দৃষ্টিনন্দন করেই এটি সাজানো হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

কার্যাদেশ অনুযায়ী আগামী মাসেই পার্কটির সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।