কালভার্টে ঢালাইয়ের পরের দিনই ফাটল!

হাজীগঞ্জে নবনির্মিত কালভার্টের ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছবি: প্রথম আলো।
হাজীগঞ্জে নবনির্মিত কালভার্টের ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছবি: প্রথম আলো।

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় গত বৃহস্পতিবার সকালে একটি কালভার্টে ঢালাই দেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে ঢালাইয়ের একাধিক স্থানে ধরা পড়েছে ফাটল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় এ ঘটনা ঘটেছে।

এনায়েতপুর-ডাটরা সড়কের রাজ নারায়ণ খালের ওপর এই কালভার্ট নির্মাণ করে চাঁদপুরের হায়দার ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এটি হাজীগঞ্জ উপজেলার গন্ধর্বপুর উত্তর ইউনিয়নের আহম্মদপুর বাজারের কালভার্ট নামে পরিচিত।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আনিছুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘শুরুতেই ঠিকাদার আগের কালভার্টের পুরোনো মালামাল আবারও ব্যবহার করেছেন। এ বিষয়ে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। আমরা এই কালভার্ট আর চাই না। এটি ভেঙে নতুন করে কালভার্ট নির্মাণ করা হোক।’

ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরাও চাই কালভার্টটির কাজ ভালোভাবে হোক।’ অবশ্য কয়েক দিন আগে কালভার্টটির কাজ ঠিকভাবে হচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি।

হাজীগঞ্জে নবনির্মিত কালভার্টের ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছবি: প্রথম আলো।
হাজীগঞ্জে নবনির্মিত কালভার্টের ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছবি: প্রথম আলো।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কালভার্টটিতে ঢালাইয়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপরিভাগে বড় বড় কয়েকটি স্থানে ফাটল ধরে। যেকোনো মুহূর্তে এটি ধসে পড়তে পারে। ছাদ ঢালাইয়ের সময় ১২০ ব্যাগ সিমেন্ট ব্যবহার করার নির্দেশ থাকলেও ঠিকাদার ৮০ ব্যাগ সিমেন্ট ব্যবহার করেছেন। এ কারণে বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী রাহাত আমিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে খুদেবার্তা পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বৈশাখী বড়ুয়া মুঠোফোনে বলেন, এলাকা থেকে অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে সহকারী প্রকৌশলীকে পাঠানো হয়েছে। কোনো অনিয়ম হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সহকারী প্রকৌশলী মো. জাহিদ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, অতিরিক্ত তাপমাত্রা থাকায় ও পানি না দেওয়ায় কালভার্টটির উপরিভাগের কয়েকটি স্থানে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। এটি বড় ধরনের সমস্যা নয়।

কালভার্টটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হায়দার ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আলমগীর হোসেন বলেন, যে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে সেটি সিমেন্ট দিয়ে ঠিক করে দেওয়া হবে। এরপর পানি দিলে ফাটল ঠিক হয়ে যাবে। এটি অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে ঘটেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

কালভার্টটি নির্মাণের শুরুতেই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, পুরোনো কালভার্টের ইট ভেঙে কণা তৈরি করা হয়েছে। সেই কণা দিয়ে কালভার্টের নিচের বেইজ ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে। পুরোনো কালভার্টের রড নতুন করে ব্যবহার করতে চাইলে এলাকাবাসীর বাধার কারণে ব্যবহার করা যায়নি।