নেশার টাকা না পেয়ে গৃহবধূকে খুন!

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মাদারীপুরে নেশার টাকা না দেওয়ায় চাঁদনী আক্তার (১৯) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। আজ রোববার সকালে সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের জাজিরা এলাকা থেকে চাঁদনীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে সদর উপজেলার জাজিরা গ্রামের রিয়াদের সঙ্গে বিয়ে হয় পাশের পাঁচখোলা গ্রামের চাঁদনীর। বিয়ের পর থেকেই রিয়াদ নেশার টাকার জন্য চাঁদনীকে মারধর করতেন। এ নিয়ে স্থানীয়রা বেশ কয়েকবার সালিস করেন। কিন্তু এতে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন রিয়াদ। নেশার টাকা না দেওয়ায় একপর্যায়ে আজ ভোররাতে চাঁদনীতে পিটিয়ে হত্যা করেন রিয়াদ। পরে চাঁদনীর শ্বশুরবাড়ির লোকজন লাশটি বাড়ির পাশে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যান। ভোরে স্থানীয়রা বিষয়টি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠায়।

নিহত চাঁদনীর বাবা আবুল হাওলাদার অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকেই যৌতুক ও নেশার টাকার জন্য তাঁর মেয়েকে মারধর করা হতো। সকালে স্থানীয়দের কাছে তিনি খবর পান, তাঁর মেয়েকে হত্যা করে বাড়ির লোকজন পালিয়েছেন। চাঁদনীকে তাঁর স্বামী ও পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তিনি ন্যায়বিচার চান।

আজ দুপুরে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা অখিল সরকার বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। নিহতের গলায় দাগ আছে। শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষ হলে পুলিশের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত চাঁদনীর স্বামীর মুঠোফোন নম্বরে ফোন করা হলে তাঁর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়ির লোকজন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে অভিযুক্ত রিয়াদের এক নিকটাত্মীয় বলেন, রিয়াদের সঙ্গে চাঁদনীর প্রায়ই ঝগড়া হতো। রিয়াদ মাঝে মধ্যে চাঁদনীকে মারধর করতেন। তবে সেটা কী নিয়ে, তা তিনি জানেন না। রিয়াদ নেশাগ্রস্ত কিনা, জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, রিয়াদ এক সময় মাদকাসক্ত ছিলেন।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সিরাজুল হক সরদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে আমরা লাশটি রিয়াদের বাড়ির উঠান থেকে উদ্ধার করি। আমরা ধারণা করছি, এটি আত্মহত্যা। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পরে স্পষ্ট করে বলা যাবে মূল রহস্য কী ছিল। এ ছাড়া সুরতহাল প্রতিবেদনে আঘাতের তেমন কোনো চিহ্ন আমরা পাইনি।’