বিএডিসির কর্মকর্তাকে প্রাণনাশের হুমকি, চুক্তিবদ্ধ চাষি গ্রেপ্তার

চুয়াডাঙ্গায় অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার জাহিদুল ইসলাম। ছবি: প্রথম আলো
চুয়াডাঙ্গায় অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার জাহিদুল ইসলাম। ছবি: প্রথম আলো

চুয়াডাঙ্গায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) এক কর্মকর্তাকে পিস্তল দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে জাহিদুল ইসলাম চঞ্চল (৪০) নামে এক চুক্তিবদ্ধ চাষিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে সদর উপজেলার আলোকদিয়া ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) কানাই লাল সরকার আজ সোমবার বেলা ১২টায় সদর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। এ সময় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জাহিদুল তাঁর লোকজন নিয়ে বিএডিসির উপপরিচালক (কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্স) মোর্শেদুল ইসলামের কক্ষে যান। এ সময় বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ চাষি জাহিদুল চুক্তির আওতায় জমির পরিমাণ ১০ একর থেকে ৫০ একরে উন্নীত করতে মোর্শেদুল ইসলামের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। মোর্শেদুল এতে রাজি না হলে নিজের কাছে থাকা পিস্তল দিয়ে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেন জাহিদুল।

এই ঘটনার পর সেদিনই বাদী হয়ে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মোর্শেদুল। জিডির পাশাপাশি ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজও পুলিশকে সরবরাহ করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কানাই লাল সরকার বলেন, জিডি ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে সদর থানা-পুলিশ রোববার রাতে জাহিদুল ইসলামকে দৌলতদিয়ার এলাকা থেকে আটক করে। এরপর থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হুমকির সময় ব্যবহৃত অস্ত্রের সন্ধান দেন তিনি। জাহিদুলের দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে রাত দুইটার দিকে হাতিকাটা এলাকায় একটি গুদাম থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, পিস্তলের একটি ম্যাগাজিন, চারটি গুলি ও সাত বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান বলেন, অস্ত্র, গুলি ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় জাহিদুল ইসলামসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

মোর্শেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি চার বছর ধরে চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত আছেন। এর আগে কখনো এ ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হননি তিনি। চলতি মৌসুমে আউশ ধান উৎপাদনের জন্য ৫০০ একর জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। জাহিদুলের চুক্তির আওতায় জমির পরিমাণ ১০ একরের পরিবর্তে ৫০ একর করা এবং তাঁর সঙ্গে থাকা আলমডাঙ্গা উপজেলার জুয়েলকে নতুন করে চুক্তিবদ্ধ করতে চাপ দিতে থাকে। পরপর দুই দিন টেলিফোনে হুমকি দেওয়ার পর একপর্যায়ে পিস্তল দিয়ে খুন করার হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে।