ভাওয়ালের রাজ্যে নাগলিঙ্গম

গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নাগলিঙ্গমগাছ।  ছবি: প্রথম আলো
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নাগলিঙ্গমগাছ। ছবি: প্রথম আলো

গাছের কাণ্ডজুড়ে পাকা সফেদা ফলের মতো বাদামি গোলাকার ফল। সঙ্গে পুরু পাপড়ির ফুল। সারা গায়ে বয়সের ছাপ। তবে ফুল ও ফলের দিকে তাকালে মনে হবে নবযৌবনা ফলবতী কোনো গাছ। এটি নাগলিঙ্গম।

গাজীপুর জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে যাঁরা বিভিন্ন কাজে গিয়ে থাকেন, নাগলিঙ্গম গাছটি তাঁরা দেখে থাকবেন। লটকন যেমন গাছের কাণ্ড ফেটে বের হয়ে সারা কাণ্ড ছেয়ে ফেলে, নাগলিঙ্গমেরও তাই—ভিন্নতা হচ্ছে, এর ফলগুলো দেখতে সফেদার মতো, কিন্তু আকারে অনেক বড়। ফলের কারণে নয়, নাগলিঙ্গম দৃষ্টি কাড়ে তার ফুলের সৌন্দর্য দিয়ে।

গোলাকার ফলগুলোকে ক্যানন ফলও বলে থাকেন অনেকে। গাজীপুরের ভাওয়াল রাজার স্মৃতিবিজড়িত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভেতর এই বিরল নাগলিঙ্গমগাছে ঝুলছে ফলগুলো। ফলগুলোর আকার বড় বেলের মতো। গাছের গোড়ায় ফলের পরিমাণ বেশি। ফলগুলোর ফাঁক গলে সাপের মতো ফণা তুলে ফুলের ডগাগুলো বেরিয়ে আছে।

রাজবাড়িতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পাশে শতাব্দীপ্রাচীন গাছটি কালের সাক্ষী হয়ে ভাওয়াল রাজাদের মহিমা আজও ধরে রেখেছে। সুবিশাল ঐতিহ্যের বিরল প্রজাতির ওই গাছের নাম নাগলিঙ্গম।

গাজীপুরে নাগলিঙ্গমগাছের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভাওয়াল রাজার স্মৃতিগাথা। ফলের পাশাপাশি ফুটে থাকা ফুলের সৌরভে প্রতিদিন মুগ্ধ হচ্ছেন দর্শনার্থীরা। দেশে এ-জাতীয় গাছের সংখ্যা ৫০টির মতো। ভাওয়াল রাজবাড়িতে ১৪-১৫টি হাতি ছিল। এদের কয়েকটির চমৎকার নামও ছিল—গুন্ডা, ফুলমালা, রেবেকা...। ভাওয়ালের জমিদার বংশের রাজকুমার রমেন্দ্রনারায়ণ রায়ের প্রিয় ছিল গুন্ডা নামের হাতিটি। হাতিশালায় তিনি নাগলিঙ্গম ফল বেশি খাওয়াতেন।

নাগলিঙ্গম গাছটির বয়স সম্পর্কে কোনো সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।