নওগাঁয় ৩ হাজার গাছ কেটেছেন তিন সহোদর

নার্সারি মালিক তৈয়বুর রহমানের অভিযোগ, জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধের জেরে তাঁর তিন ছোট ভাই নার্সারি থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকার গাছ কেটে ফেলেছেন। তবে ছোট ভাইদের দাবি, তাঁরা শুধু তাঁদের জায়গা থেকে গাছ কেটেছেন।

পুলিশ, ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা, তৈয়বুরের বাবা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার বাসিন্দা মফিজ উদ্দিন (প্রয়াত) ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি জীবদ্দশায় নজিপুর পৌরসভার পুঁইয়া মৌজায় ছেলেমেয়েদের নামে ১৮ বিঘা জমি কেনেন। বাবার অনুমতি নিয়েই ২৫-৩০ বছর আগে ওই জমিতে নার্সারি ও মাছ চাষ শুরু করেন তৈয়বুর। নার্সারি করে সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার লাভ করেছেন। ১৯ মার্চ তাঁর তিন ছোট ভাই জয়নাল আবেদিন, রফিকুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি দল নার্সারি দখল করে নেয়। নার্সারির ৫০০টি বড় এবং আড়াই হাজারের বেশি চারাগাছ কেটে ফেলা হয়। তৈয়বুর প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। পরে তিনি ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে আসেন। এ ঘটনায় অভিযোগ করতে গেলে থানা-পুলিশ তৈয়বুরকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। তিনি ১১ এপ্রিল নওগাঁ বিচারিক হাকিম আমলি আদালতে মামলার আরজি দায়ের করেন। আদালত তা আমলে নিয়ে পত্নীতলা থানা-পুলিশকে বিষয়টি তদন্তে নির্দেশ দেন।

জানতে চাইলে তৈয়বুর রহমান বলেন, ‘আমার বাবা জীবদ্দশায় আমাদের ভাইবোনদের নামে ওই ১৮ বিঘা জমি ক্রয় করে যান। সেখানে আমার নামে ১০৫ শতাংশ জমি (প্রায় সাড়ে ৩ বিঘা) জমি রয়েছে। নার্সারি করার সুবিধার্থে বাবার মৌখিক অনুমতি নিয়েই আমি অন্য জায়গায় আমার মালিকানাধীন জমি অন্য ভাইবোনদের দিয়ে ২৫-৩০ বছর আগে এখানে নার্সারি গড়ে তুলি। এত দিন এ নিয়ে ভাইবোনদের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ ছিল না। কিন্তু হঠাৎই জোর করে আমার নার্সারির গাছগুলো কেটে ফেলে জমি দখল করে নিয়েছে আমার তিন ছোট ভাই জয়নাল, রফিকুল ও জাহাঙ্গীর। ওরা আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘সেখানে মাত্র ১০৫ শতাংশ জমির মালিক আমাদের বড় ভাই তৈয়বুর। কিন্তু এত দিন তিনি জোর করে সেই জমি ভোগদখল করে খাচ্ছিলেন। স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তি ও মাতবরদের উপস্থিতিতে বৈঠক করে এবং জমি পরিমাপ করে তৈয়বুরকে তাঁর ভাগ বের করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের অংশে যেসব গাছ পড়েছিল, আমরা সেই গাছগুলো কেটে নিয়েছি।’

নার্সারির জায়গায় মালিকানাধীন জমি তৈয়বুরকে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে অন্য জায়গায় তৈয়বুরের জমি অন্য ভাইবোনেরা ভোগ করছেন, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জয়নাল বলেন, ‘এ ধরনের কোনো শর্ত হয়নি। আমরা তাঁর কোনো জমিও ভোগদখল করছি না।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পত্নীতলা থানার এসআই আবদুল করিম বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত কার্যক্রম চলছে।