তাইফার অপরাধটা কী?

ইলাফ নূর তাইফা। ছবি: সংগৃহীত
ইলাফ নূর তাইফা। ছবি: সংগৃহীত

ইলাফ নূর তাইফা প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। বিদ্যালয়ে মেধাবী হিসেবে সুনাম রয়েছে তার। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের সিকদারপাড়া এলাকায় ইক্রা ইসলামিক একাডেমি থেকে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা দিচ্ছিল সে। মঙ্গলবার সকাল নয়টা থেকে আরবি বিষয়ের মধ্য দিয়ে তার শেষ পরীক্ষা ছিল। তবে তার আগেই শেষ হয়ে গেল তার জীবন। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে দিকে তাইফার মা ডেইজি আক্তার (২৮), তাইফা ও তার বোন ইসরাত নূরের (১০ মাস) অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও স্থানীয় ব্যক্তিরা ধারণা করছেন, পারিবারিক কলহের জেরে দুই সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর নিজেও বিষ পানে আত্মহত্যা করেছেন ডেইজি।

এ ঘটনার পর থেকে ডেইজির স্বামী মুদি দোকানদার নুর নবী ওরফে বাহাদুরকে (৩২) খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। ডেইজির স্বজনেরা বলেছেন, ডেইজি ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ঘটনার পর তাঁদের তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর নুর নবীকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

ডেজি আক্তার, ইলাফ নূর তাইফা ও ইসরাত নূর। ছবি: সংগৃহীত
ডেজি আক্তার, ইলাফ নূর তাইফা ও ইসরাত নূর। ছবি: সংগৃহীত

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙ্গুনিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. রাকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করতে তিনি এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে জেনেছেন, স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া লেগে থাকত। এ নিয়ে গ্রাম্য সালিসও হয়েছে। স্ত্রী ডেইজি আকতার স্বামীর সঙ্গে বারবার কলহের কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। তাই দুই সন্তানকে বিষ খাইয়ে নিজেও আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে বলে জানান তিনি।

নুর নবীর প্রতিবেশী নাছির উদ্দিন বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে নুর নবীর ভাই মো. নুরুজ্জামান ঘরে বিষের গন্ধ পেয়ে চেঁচামেচি করে প্রতিবেশীদের ডেকে আনেন। বাড়ির পাশে মুদির দোকান থেকে স্বামী নুর নবীও ছুটে আসেন। পরে গৃহবধূ ও দুই শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায় তারা।’

এই কক্ষে পরীক্ষা দেওয়ার কথা তাইফার। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সরফভাটা ইউনিয়নের ইকরা ইসলামিক একাডেমি থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
এই কক্ষে পরীক্ষা দেওয়ার কথা তাইফার। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সরফভাটা ইউনিয়নের ইকরা ইসলামিক একাডেমি থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

ইক্রা ইসলামিক একাডেমির অধ্যক্ষ নুরুল আবছার বলেন, ‘তাইফা অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিল। ভদ্র ও নম৶ স্বভাবের জন্য স্কুলে সবার প্রিয় ছিল সে। আরবি বিষয়ে শেষ পরীক্ষা ছিল তার। কিন্তু পরীক্ষাটি দেওয়ার আগেই দুনিয়া থেকে চলে গেল।’