নানা দাবি নিয়ে শ্রমিকেরা ঢাকার রাজপথে

‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও, লড়াই করো’, ‘কথায় কথায় শ্রমিক ছাঁটাই চলবে না’, ‘যৌন হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ করতে হবে’—মহান মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর প্রেসক্লাব ও পল্টন এলাকা আজ বুধবার এমন স্লোগানে মুখরিত ছিল। সকাল থেকেই দলে দলে নানা সংগঠনের শ্রমিক এসব এলাকায় জড়ো হন। জাতীয় পতাকাসহ নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন শ্রমিকেরা।

পোশাকশ্রমিকেরা দাবি করেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নারী পোশাকশ্রমিকদের নিরাপত্তা দিতে হবে।

প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক সমাবেশ। ছবি: আসাদুজ্জামান
প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক সমাবেশ। ছবি: আসাদুজ্জামান

সকালে প্রেসক্লাবের সামনের সমাবেশে মিরপুর থেকে এসেছিলেন রূপালী বেগম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, গার্মেন্টসে নারী শ্রমিকেরা নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। কর্মক্ষেত্রে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

আজ সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ব্যানারে দুই শতাধিক পোশাকশ্রমিক মানববন্ধনে অংশ নেন। শ্রমিকদের মুখে স্লোগান ছিল, ‘কেউ খাবে আর কেউ খাবে না, তা হবে না, তা হবে না’, ‘মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস দিতে হবে’।

নারী শ্রমিকদের মিছিল থেকে কর্মক্ষেত্রে যৌন নিপীড়ন বন্ধের দাবি ওঠে। ছবি: আসাদুজ্জামান
নারী শ্রমিকদের মিছিল থেকে কর্মক্ষেত্রে যৌন নিপীড়ন বন্ধের দাবি ওঠে। ছবি: আসাদুজ্জামান

গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘নারী শ্রমিকেরা নানাভাবে হয়রানির শিকার। নানা বৈষম্যের শিকার। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নারীর মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস। অথচ আমরা যারা কলকারখানায় কাজ করছি, তাদের মাতৃত্বকালীন ছুটি মাত্র ১৬ সপ্তাহ।’ অবিলম্বে মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করার দাবি জানান এই শ্রমিকনেত্রী। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বলেন, চাকুরিচ্যুত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল করতে হবে। শ্রমিকদের নামে করা মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে হবে।

প্রতিবাদী শ্রমিকের স্লোগানে মুখর প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ। ছবি: আসাদুজ্জামান
প্রতিবাদী শ্রমিকের স্লোগানে মুখর প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ। ছবি: আসাদুজ্জামান

পল্টন মোড়ে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ব্যানারে কয়েক শ নারী ও পুরুষ শ্রমিক মানববন্ধনে অংশ নেন। এসব শ্রমিক কথায় কথায় শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধের দাবি করেন। এই সংগঠনের মানববন্ধনে অংশ নেওয়া পোশাকশ্রমিক সালমা খাতুন বলেন, নারীরা কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। শ্রমিকদের মজুরি কম। তিনি জীবনযাপনের উপযোগী মজুরি দেওয়ার দাবি জানান। অন্তত পাঁচটি শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দাবি করেন, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমজীবী ও শিল্পরক্ষা আন্দোলনের নেতারা দাবি করেন, নূন্যতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা ঘোষণা করতে হবে। সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের ব্যানারে শতাধিক শ্রমিক মানববন্ধনে অংশ নেন। নানা শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের দাবি, অবৈধভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে।