মানবাধিকার কর্মকর্তা পরিচয়ে অশালীন আচরণ, আটক ৩

বরিশালের গৌরনদীতে মানবাধিকার সংগঠক পরিচয়ে ওসির সঙ্গে অশালীন আচরণ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গতকাল বুধবার তিন ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে আটক হওয়া ব্যক্তিরা জানান, তাঁরা একটি হত্যা মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে গিয়েছিলেন। অশালীন কোনো আচরণ তাঁরা করেননি।

গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গ্লোবাল হিউম্যান রাইটস ডিফেন্সের চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে দুই সহযোগীকে নিয়ে তাঁর কক্ষে ঢোকেন আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। কক্ষে ঢুকেই তিনি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ওই থানায় দায়ের হওয়া শিশু সৌরভ মণ্ডল হত্যা মামলার বিষয়ে তথ্য জানতে চান। তিনি (ওসি) সার্বিকভাবে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার পরও রবীন্দ্র ঘোষ ও তাঁর দুই সহযোগী তাঁর (ওসি) কাছে কৈফিয়ত চান এবং অশালীন আচরণ করেন। এ সময় বিনা অনুমতিতে রবীন্দ্র ঘোষের সহযোগী দিলিপ কুমার তাঁর (ওসি) ছবি তোলেন। ছবি তুলতে তিনি আপত্তি জানান। এ নিয়ে রবীন্দ্র ঘোষ ও সহযোগীদের সঙ্গে তাঁর বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রবীন্দ্র ঘোষ ও তাঁর সহযোগীরা উত্তেজিত হয়ে ওসিকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখান এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাঁদের তিনজনকে আটক করে। তাঁরা হলেন চট্টগ্রামের রাউজান এলাকার রবীন্দ্র ঘোষ এবং তাঁর সহযোগী নীলফামারীর গয়াবাড়ি এলাকার দিলিপ কুমার রায় ও মাদারীপুরের রাজৈর থানার আমগ্রামের রসরাজ রায়।

এদিকে নিহত সৌরভ মণ্ডলের বাবা কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল এবং মা ভানু মণ্ডল জানান, তাঁরা সৌরভ হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। এর বাইরে তাঁরা কোনো মানবাধিকার সংগঠনের কাছে কোনো ধরনের অভিযোগ করেননি। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আটক ব্যক্তিরা নিজেদের মানবাধিকার সংগঠনের নেতা দাবি করে বলেন, তাঁরা সৌরভ হত্যা মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে এসেছিলেন। কিন্তু অশালীন কোনো আচরণ করেননি।

ওসি গোলাম সরোয়ার বলেন, এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন থানায় গিয়ে এলাকাভিত্তিক ইস্যু নিয়ে ওসিদের প্রভাবিত করে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিত। কখনো কখনো ওসিদের পদক দেওয়ার নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।