বিমানের পদত্যাগী এমডিসহ ১০ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

বাংলাদেশ বিমানের সদ্য পদত্যাগকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মুনীম মোসাদ্দিক আহম্মেদ
বাংলাদেশ বিমানের সদ্য পদত্যাগকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মুনীম মোসাদ্দিক আহম্মেদ

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করার সময় দেশ ছাড়তে পারেন, এমন আশঙ্কায় বাংলাদেশ বিমানের সদ্য পদত্যাগকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ১০ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার দুদকের পক্ষ থেকে এ চিঠি পাঠানো হয়।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিমানের এমডি আবদুল মুনীম মোসাদ্দিক আহম্মেদসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। এ সময় তাঁরা যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারেন সে জন্য দুদকের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বরাবর এ চিঠি পাঠিয়েছেন। এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) এবং শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওসি (ইমিগ্রেশন) বরাবর চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ঘুষ নিয়ে ক্যাডেট পাইলট নিয়োগসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান চলছে।

এমডি ছাড়া বিমানের আরও যাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন, বিমানের জুনিয়র গ্রাউন্ড সার্ভিস অফিসার, বিমান শ্রমিক লীগের সভাপতি ও বিমানের সিবিএ নতা মশিকুর রহমান, গ্রাউন্ড সার্ভিস সুপারভাইজার জিএম জাকির হোসেন, মিজানুর রহমান ও একেএম মাসুম বিল্লাহ, কমার্শিয়াল সুপারভাইজার রফিকুল আলম ও গোলাম কায়সার আহমেদ, জুনিয়র কমার্শিয়াল অফিসার মারুফ মেহেদী হাসান এবং কমার্শিয়াল অফিসার জাওয়েদ তারিক খান ও মাহফুজুল করিম সিদ্দিকী।

চাকরির মেয়াদ এক মাস বাকি থাকতেই গত মঙ্গলবার পদত্যাগে বাধ্য হন বিমানের এমডি আবদুল মুনীম মোসাদ্দিক আহম্মেদ। ওই দিন
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মুহিবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিমানের এমডি মোসাদ্দেকের বিরুদ্ধে পাইলট নিয়োগ, বিমানের বিভিন্ন স্টেশনের কান্ট্রি ম্যানেজার নিয়োগসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছি।’

বিমান সূত্র জানায়, বিমানের পাইলট নিয়োগের বিষয়ে ২০১৮ সালে মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সম্প্রতি ওই কমিটি তাদের প্রতিবেদন জামা দেয়। তাতে পাইলট নিয়োগে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে এমডি মোসাদ্দিক আহমেদের আপন ভাতিজাকেও পাইলট হিসেবে নিয়োগ দিতে বিশেষ সুবিধার দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

এ ছাড়া লন্ডনে কোটি কোটি টাকার (ফ্রি) টিকিট ইস্যু করে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছিল লন্ডনের বিমানের কান্ট্রি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। তাঁকেও ওএসডি করা হয়।

বিমানের সূত্র জানায়, এমডি মোসাদ্দিক আহমেদের চাকরির মেয়াদ চলতি বছরের ৩১ মে শেষ হওয়া কথা। এ জন্য মাস দুয়েক আগে নতুন এমডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বিমান। কিন্তু তার আগেই পাইলট নিয়োগের দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের কারণে তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়।