কক্সবাজারে সাড়ে ৪ লাখ মানুষের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। পতেঙ্গা বেড়িবাঁধ, ০২ মে। ছবি: ফোকাস বাংলা
ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। পতেঙ্গা বেড়িবাঁধ, ০২ মে। ছবি: ফোকাস বাংলা

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র আঘাত মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে কক্সবাজারের স্থানীয় প্রশাসন। ফণীর আক্রমণ থেকে মানুষের প্রাণ বাঁচাতে কক্সবাজারে ৫৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রও যোগ হবে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হবে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৮৪৩ জন মানুষের। খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণকক্ষও। সমুদ্র উত্তাল থাকায় আজ বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটকদের সাগরে নামতে দেওয়া হচ্ছে না।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের শহীদ এ টি এম জাফর আলম সম্মেলনকক্ষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার এসব তথ্য জানান।

জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার বলেন, ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই মাইকিং এবং লোকজনকে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জরুরি মুহূর্তে সরবরাহ করার জন্য ২ লাখ মানুষের খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত শুকনো খাবারও মজুত করা আছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, ৩ মে বিকেল থেকে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব কক্সবাজারে শুরু হওয়ার আশঙ্কা আছে। আগামী ৫ মে অমাবস্যার পূর্ণ জোয়ার হবে। এর সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব মিলিয়ে পানির উচ্চতা ৪-৫ ফুট বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মো. আলমগীর বলেন, দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য পুরো জেলায় ৮৯টি মেডিকেল দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর বাইরে সেন্ট মার্টিনের জন্য পৃথক একটি মেডিকেল দল গঠন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রও মজুত আছে।

দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) উপপরিচালক মোহাম্মদ হাফিজ আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সিপিপির ৬ হাজার ৪৫০ জন স্বেচ্ছাসেবীকে প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে ১ হাজার ৭০০ জন স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করা হয়েছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তপন কুমার ত্রিপুরা জানান, মহেশখালীর ধলঘাটা ও কুতুবদিয়ায় বেড়িবাঁধে দুটি বড় ভাঙন রয়েছে। সেখানে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা আছে।

টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, সমুদ্র উত্তাল থাকায় বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটকদের সাগরে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান জানান, শহরের বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হবে।