এক মণ ধানের দামে এক কেজি গরুর মাংস!

সিরাজগঞ্জ জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার উৎসব। ফলনও এবার মোটামুটি ভালো। তবে ধানের দাম নিয়ে অখুশি কৃষক। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাটে বোরো ধান বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা মণ দরে। অথচ এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৫০০ টাকা।

গতকাল বৃহস্পতিবার জেলার রায়গঞ্জ, সদর, তাড়াশ ও কাজীপুর উপজেলার ২০ জন কৃষক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ধানের দাম কমে যাওয়ার বিষয়টি জানা যায়। জেলার নয়টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৪১ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়। ফলন ভালোই হয়েছে উল্লেখ করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে কৃষক আশানুরূপ ফলন পাবেন।

তবে রায়গঞ্জসহ কয়েকটি উপজেলায় ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়ে ফসলের কিছু ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায়। এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের উপপরিচালক হাবিবুল হক বলেন, সারা জেলায় ব্লাস্টে প্রায় ৪০ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া এলাকার কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, ৪৮ শতক জমির ধান কাটতে শ্রমিককে দিতে হয়েছে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। সঙ্গে দুপুরের খাবার। এর আগে ধান চাষ ও সার বাবদ প্রায় ১১ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। হাটে এ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা মণ। তাতে ২৭ মণ ধান বিক্রি করে পাওয়া যাবে ১৬ হাজার ২০০ টাকা। যোগ-বিয়োগ করলে কিছুই লাভ হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, লাভ একটাই, একসঙ্গে কিছু টাকা পাওয়া যায়।

আবদুল হালিম নামের একজন কৃষক বলেন, কৃষকেরা ধান বিক্রি করতে গেলে দাম পান না। কিন্তু কিনতে গেলে দাম চড়া। গরু বিক্রি করতে গেলে দাম কমে যায়। অথচ এখন এক মণ ধান বিক্রি করে পাওয়া যায় এক কেজি গরুর মাংস।

একই ধরনের কথা বলেন আরও পাঁচজন কৃষক।

ধানগড়া বাজারের দুজন মাংস ব্যবসায়ী বলেন, ধান কাটার শ্রমিকদের দুপুরে খাওয়াতে হয় বলে এ সময়ে গরুর গোশতের চাহিদা বাড়ে। এ ছাড়া গরুর দাম বেশি হওয়ায় এখন মাংসও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।