রাজউকে দুই সেবার আবেদন শুধু অনলাইনে

>

• ভবনের নকশা অনুমোদন
• রাজউক এলাকায় ভবন নির্মাণ করতে হলে সংস্থাটি থেকে ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র ও নকশার অনুমোদন নিতে হয়


ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র ও ভবনের নকশা অনুমোদন প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে অনলাইনে শুরু করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। সংস্থাটি বলছে, এখন থেকে এই দুই ধরনের সেবার আবেদন আর হাতে হাতে নেওয়া হবে না। ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে যে কেউ ঘরে বসেই এ–সংক্রান্ত সেবার আবেদন করতে পারবেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজউক মিলনায়তনে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, আজকে অবসান হলো দীর্ঘসূত্রতার, অবসান হলো হয়রানির, শুরু হলো সেবা সহজীকরণের মধ্য দিয়ে দ্রুত সেবা পাওয়ার যুগান্তকারী মুহূর্ত।

অনুষ্ঠানে এই সেবা সম্পর্কে জানানো হয়, ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র ও ভবন নির্মাণ অনুমোদন প্রক্রিয়ার আবেদন অনলাইনেই নিষ্পত্তি করা হবে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের আবেদন কোন পর্যায়ে আছে, তা জানতে রাজউকে আসতে হবে না। ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন কোন পর্যায়ে আছে তা দেখা যাবে।

http://cp.rajukdhaka.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করে রাজউকের আটটি জোনের বাসিন্দারা এই সেবা নিতে পারবেন।

রাজউক বলছে, এখন থেকে সেবা পেতে গ্রাহকের আগের চেয়ে অনেক সময় ও খরচ বাঁচবে। আবেদন করতে গিয়ে কোনো সমস্যা হলে হট লাইন (০১৯৯২-০০০৬৬৬) নম্বরে সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ফোন করলে সমাধান পাওয়া যাবে। আগে আবেদনের সময় যেসব কাগজপত্র রাজউকে এসে জমা দিতে হতো, সেসব কাগজের সফট কপি অনলাইনে জমা দিলেই চলবে।

এর আগে ২০১৫ সালের রাজউকের ৮টি অঞ্চলের মধ্যে ৫ নম্বর অঞ্চলে (ধানমন্ডি ও লালবাগ) পরীক্ষামূলকভাবে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। পরে তিন মাস অন্তর রাজউকের একটি করে অঞ্চল এই কার্যক্রমের আওতায় আসার কথা ছিল। কিন্তু সে অনুযায়ী কাজ এগোয়নি।

রাজউকের অনলাইন কার্যক্রমের মাধ্যমে স্বচ্ছতার ভিত্তি রচিত হলো বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী। গতকাল উদ্বোধনের তিনি আরও বলেন, ‘রাজউকের সেবা নিয়ে সমালোচনার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আজকের এই কর্মসূচি নিয়েছি। আমি আজকের দিনে যে শুভ সূচনা করলাম, সেই শুভ সূচনার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। বাকি এক মাসের মধ্যে অন্যান্য সেবাও অনলাইনে পাওয়া যাবে। এরপরে কাউকে টেবিলে টেবিলে ধরনা দিতে হবে না।’

রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার চেয়ে বিত্তবৈভব বড় নয়। চিত্তটাকে বিত্তবান করেন। হৃদয়টাকে বড় করে, নৈতিকতাকে বড় করেন। মূল্যবোধকে বড় করেন। আপনার সন্তান যেন গর্ব করে বলতে পারে, আমার বাবা একজন সৎ কর্মকর্তা ছিলেন।’

অনুষ্ঠানে রাজউকের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যেই রাজউক বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর জন্য প্রাথমিকভাবে, বিশেষ করে হিসাব শাখার কিছু কাজ (টাকা জমা দেওয়া নেওয়া কাজ) ডিজিটাল পদ্ধতিতে করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র ও নকশা অনুমোদন—এ দুটি প্রধান কাজ আর ম্যানুয়ালি হবে না। নকশা নিয়ে ঘোরাফেরা করতে হবে না। এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে যেতে হবে না, ঘরে বসেই এ কাজ করা যাবে।’ আগামী এক মাসের মধ্যে ভবন ব্যবহার বা বসবাসের সনদ ও বৃহৎ প্রকল্পের অনুমোদন অনলাইনে পাওয়া যাবে বলে জানান রাজউক চেয়ারম্যান।

রাজউক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ভবনের নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে আগে ১৬টি ধাপ ছিল, যা ৬ টিতে কমিয়ে আনা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব আখতার হোসেন, ইয়াকুব আলী পাটওয়ারী।