প্রতিবাদ জানিয়ে বিসিএস পরীক্ষা দেননি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীরা আজ সকালে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন কার্যালয়ের সামনে প্রতীকী অনশন করেন। ঢাকা, ০৩ মে। ছবি: সংগৃহীত
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীরা আজ সকালে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন কার্যালয়ের সামনে প্রতীকী অনশন করেন। ঢাকা, ০৩ মে। ছবি: সংগৃহীত

শ্রুতলেখক নিয়ে সরকারি কর্মকমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ৪০তম বিসিএস পরীক্ষা বর্জন করেছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁরা আজ শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন কার্যালয়ের সামনে প্রতীকী অনশন করেন।

সকালে ছিল বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এতে প্রার্থী ছিলেন ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২০০ নম্বরের এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এই পরীক্ষায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রার্থীরা অংশ নেননি।

চাকরিপ্রত্যাশী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের আহ্বায়ক মো. আলী হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ৩১ মার্চ সরকারি কর্ম কমিশন শ্রুতলেখক-সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ৪০তম প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কর্ম কমিশন শ্রুতলেখক সরবরাহ করবে। আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা ওই সিদ্ধান্তের ওপর আস্থাহীনতা তৈরি করেছে। কারণ কমিশনের শ্রুতলেখক দেওয়া হলে, সেটা আমাদের জন্য অসুবিধা হবে। তাই আমরা বিসিএস পরীক্ষা বর্জন করেছি।’

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী চাকরি প্রার্থীরা বলছেন, তাঁরা এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নীতিমালা এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রুতলেখক-সংক্রান্ত নীতিমালা অনুযায়ী পরীক্ষা দিয়ে এসেছেন। কিন্তু কর্ম কমিশন স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে তাঁদের বিসিএস দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ৯ এপ্রিল সরকারি কর্ম কমিশন কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দিয়ে তাঁরা তাঁদের দাবি উত্থাপন করেছেন। কিন্তু কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সকাল ৯টার দিকে আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন প্রায় ৭০ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী চাকরিপ্রত্যাশী। তাঁরা চোখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ করেন। চাকরিপ্রত্যাশী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের ব্যানারে তাঁরা এই প্রতিবাদ জানান। পরে বেলা পৌনে একটার দিকে তাঁরা প্রতীকী অনশন শেষ করেন।

আলী হোসেন বলেন, ‘আমরা এর প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন করেছি। আমাদের দাবি পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী বিসিএস পরীক্ষায় শ্রুতলেখকের ব্যবস্থা দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য করা হোক। নিয়মের কারণে আমরা পরীক্ষা দিতে পারলাম না। কিন্তু আমরাও তো টাকা দিয়ে ফরম কিনেছি। তাই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ বিসিএসের ব্যবস্থা করা হোক।’