ফণীর শক্তি কমে গভীর নিম্নচাপ, ৩ নম্বর সংকেত

শক্তি কমে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। বর্তমানে দেশের সব সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আজ শনিবার দুপুরে আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শাসুদ্দীন আহমেদ আজ দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, বাংলাদেশ এখন অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত নামিয়ে এর বদলে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র বাংলাদেশের জামালপুর ও জামালপুরের আশপাশে অবস্থান করছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এটি ভারতের আসামের দিকে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।

দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণী আজ দুপুরের দিকে টাঙ্গাইল, পাবনা ও ময়মনসিংহে অবস্থান করছিল। এর আগে সকাল নয়টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি ফরিদপুর-ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ছিল। বেলা দেড়টার দিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র এ কথা জানায়। ঘূর্ণিঝড়টি এখন নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফণীর কারণে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হবে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাষে জানানো হয়েছে।

ভারতের ওডিশায় আঘাত হানার ২১ ঘণ্টা পর আজ সকাল ছয়টার দিকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল অতিক্রম করে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী। আরও উত্তর দিকে চলে গিয়ে সকাল নয়টার দিকে ফরিদপুর ও আশপাশের অঞ্চলে অবস্থান করছিল। এটি পরে আরও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে দেশের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ সারা দেশে চলছে বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি।

আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন আজ প্রথম আলোকে বলেন, সমতলে আসার পর ফণী উত্তরাঞ্চলে ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের দিকে চলে যাবে। পরিণত হবে গভীর নিম্নচাপে। এরপর আরও দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরগুনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলা এবং এসব এলাকার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে চার ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে থাকা সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।