ভোলায় ফণীর প্রভাব, ঝড়ে নিহত ১

ভোলায় ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ে ঘরচাপায় একজন নিহত হয়েছেন। ঝড়ে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। বিধ্বস্ত হয়েছে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি। গবাদিপশুসহ ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে।

আজ শনিবার ভোরের দিকে ভোলার সদর উপজেলার দক্ষিণ দীঘলদি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সামসুল হকের স্ত্রী রানু বেগম (৫০) ঘরচাপায় নিহত হয়েছেন। তাঁর বাড়ি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর ছিল।

দক্ষিণ দীঘলদি গ্রামের লোকজন জানান, ভোরে ভারী বর্ষণের সঙ্গে প্রবল বেগে দমকা হাওয়া শুরু হয়। এতে দক্ষিণ দীঘলদি ইউনিয়নের বালিয়া ও কোড়ালিয়া গ্রামের দুই শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় ঘরচাপায় বেড়িবাঁধে বসবাসকারী রানু বেগম মারা যান। এ সময় দুই গ্রামের ১৭ জন আহত হয়েছেন ঘরচাপায়।

ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত মমতাজ ও শাহিনা বেগম বলেন, ভোরে ঘূর্ণিঝড় শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে গেলে সেখানকার আশ্রয়কেন্দ্র তালা মারা ছিল। পরে তাঁরা বাড়িতে চলে আসেন। তাঁরা আরও জানান, ঘূর্ণিঝড়ে তাঁদের ঘর উড়িয়ে নিয়ে গেলে তাঁরা রাস্তায় আশ্রয় নেন।

ভোলা সদর উপজেলার এই দুই গ্রামের ২০ থেকে ২৫ পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ভেলুমিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মাস্টার বলেন, তাঁর ইউনিয়নের পাঁচটি ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। আহত হয়েছেন তিনজন। পাকিস্তানবাজার ও চরনিউ হোসেনে তিনটি গরু মারা গেছে ঘর চাপা পড়ে। এ ছাড়া অসংখ্য গাছ ভেঙে পড়েছে।

সদর উপজেলা ইউএনও কামাল হোসেন বলেন, সব মিলিয়ে তাঁর উপজেলায় একজন নিহত, ২২ জন আহত হয়েছেন। ৯৩টি ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে।

দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নে ঝড়ে ২০টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। স্থানীয় ইউপির চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন বলেন, পানি উঠলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতো।

লালমোহন উপজেলা ধলী গৌরনগর ইউনিয়নের ৬টি মহিষ, ৮টি গরু ১০টি ভেড়া মেঘনা নদী পার হওয়ার সময় ডুবে মারা যায়।

উপজেলার চরকচুয়া এলাকার শাহে আলম বলেন, ঝড়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নের শাহে আলম ফরাজি বলেন, ১০ থেকে ১৫টি ঘরের চাল উড়ে গেছে ফণীর প্রভাবে। অনেক গাছ ভেঙেছে। চরফ্যাশন ইউএনও মো. রুহুল আমিন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা করা হচ্ছে। তবে কোনো হতাহত হয়নি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তাদের যত দ্রুত সম্ভব নতুন ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে এবং আর্থিক সহায়তা করা হবে। এ ছাড়া নিহত ব্যক্তির পরিবারকে নগদ ২৫ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হবে।