ফণীর ছোবলে কোটি গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

বিদ্যুৎ
বিদ্যুৎ

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সারা দেশে প্রায় এক কোটি গ্রাহকের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এর বেশির ভাগই পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) আওতাধীন এলাকা। গতকাল কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আগামীকাল সোমবার লেগে যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সমন্বয়) এ কে এম হুমায়ূন কবীর মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ চেষ্টা করছে। প্রথমে শহরগুলোতে সরবরাহ ঠিক করার চেষ্টা হচ্ছে। এরপর পর্যায়ক্রমে গ্রামগুলোতেও করা হবে। কাল সোমবারের মধ্যে সারা দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্রে জানা গেছে, দেশে আরইবির সমিতি রয়েছে ৮০টি। ঝড়ে সব সমিতির আওতাধীন এলাকাতেই বিদ্যুতের তারের ওপর গাছ পড়েছে। এতে আরইবির এলাকায় সারা দেশে বিদ্যুতের ১২৯টি খুঁটি পড়ে গেছে। আর পিডিবির সরবরাহ এলাকায় পড়েছে ৮০টি খুঁটি। ঝড়ের কারণে পিডিবির ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল ও ফেনীর গ্রাহকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) ঝড় শুরুর এক দিন আগেই অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখেছিল। তবে ঢাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ের গতি কম থাকায় রাজধানীর দুই বিতরণ সংস্থার বিতরণ লাইনে কোনো ক্ষতি হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

আরইবির সূত্রে জানা গেছে, ফণীর প্রভাবে দেশের ৬৪ জেলার ৮০টি সমিতির ৮১ লাখ ৬ হাজার ৫০০ গ্রাহক বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। সারা দেশে বিদ্যুতের গ্রাহকের সংখ্যা ৩ কোটি ৩০ লাখ, যার মধ্যে শুধু আরইবির রয়েছে ১ কোটি ৬০ লাখ গ্রাহক।

আরইবির এলাকায় সব থেকে বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে নওগাঁয় ৩ লাখ ৭০ হাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩ লাখ ৩০ হাজার, জামালপুরে ৩ লাখ ১০ হাজার, কুড়িগ্রামে ২ লাখ ৭০ হাজার ও বাগেরহাটে ২ লাখ ২৫ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন।

আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মঈন উদ্দিন গত রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আমাদের সব কর্মীকে কাজে লাগিয়েছি। ইতিমধ্যে বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হয়েছে। দ্রুতই বাকি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে।’

বিতরণ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালনের দায়িত্বে থাকা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) সঞ্চালন ব্যবস্থার কোনো ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনী বলেন, ‘আমাদের কোনো সাব-স্টেশন বা সঞ্চালন লাইনের কোনো ক্ষতি হয়নি। বিতরণ সংস্থাগুলোর লাইন মেরামত সম্পন্ন হলে পিজিসিবি বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু করবে।’