স্বস্তি পেতে ডাবে চুমুক

কাঠফাটা রোদে তৃষ্ণা মেটাতে অনেকেই চুমুক দেন ডাবে।  প্রথম আলো
কাঠফাটা রোদে তৃষ্ণা মেটাতে অনেকেই চুমুক দেন ডাবে। প্রথম আলো

উদ্বেগ–উৎকণ্ঠা ছিল। তবে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে ঢাকাসহ সারা দেশের তাপমাত্রা কমে গিয়েছিল। শুক্রবার থেকে বৃষ্টিতে গরমের তীব্রতাও কমে এসেছিল স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে। কিন্তু ফণীর প্রভাব কেটে যাওয়ার পর গতকাল রোববার শনিবারের তুলনায় ঢাকায় তাপমাত্রা বেড়ে যায় ৫ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ অবস্থায় গরমে হাঁসফাঁস করতে করতে অনেকে গিয়ে দেখলেন ডাবের দামও বেড়ে গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গতকাল রোববার বিকেল পাঁচটাতেও ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কারওয়ান বাজারের ডাব বিক্রেতাদের ভাষ্য, গরমের সময় দিনের বেলায় এমনিতেই ডাবের দাম তাঁরা ৫–১০ টাকা বেশি রাখেন। আবার সন্ধ্যার পর গরম কমলে একই আকারের ডাব কম দামে বিক্রি হয়। তাই দুই দিনের মেঘলা আবহাওয়ার পর গরম বাড়লে ডাবের দামও যে বেড়ে যাবে, এটাই স্বাভাবিক।

গতকাল কারওয়ান বাজারে মাঝারি আকারের একেকটি ডাব বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। শনিবার যা ৩০–৩৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছিল। কারওয়ান বাজারের রাস্তার ওপর বসা ডাবের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, ডাবের বিক্রি প্রচুর। ব্যস্ত ডাব বিক্রেতাদের বেশির ভাগ দর–কষাকষিতে রাজি নন। ‘এক দাম’ বলে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন। কোনো কোনো ক্রেতা দুই-তিন দোকান ঘুরে দোকানিদের মুখ থেকে ‘এক দাম’ শুনে চলে যাচ্ছেন। আবার যাঁদের তেষ্টার তীব্রতা বেশি, তাঁরা ওই ‘এক দামে’ ডাব কিনে তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন।

এদিন দুপুরে কথা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মহীউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে। ৬০ টাকায় একটা বড় আকারের ডাব কিনে তৃষ্ণা মেটাচ্ছিলেন তিনি। মহীউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গরমের সময় প্রতিদিন অন্তত একটা ডাব খাওয়া আমার অভ্যাস। শনিবার এখান থেকেই এ রকম একটা ডাব কিনেছি ৪৫ টাকায়। আজ ৬০ টাকার নিচে দিল না।’

পেট্রোবাংলার বিপরীত পাশের সড়কে রাস্তার ওপরে বড় টুকরিতে করে আরও কয়েকজনের সঙ্গে ডাব বিক্রি করছিলেন মজিদ মিয়া। তিনি জানান, আড়ত থেকে প্রতিটি ডাব কিনতে তাঁর খরচ পড়েছে ৩৬ টাকা করে। ছোট আকারের ডাব তাই ৪৫ টাকার নিচে বিক্রি করতে পারছেন না।

একই জায়গার আরেক বিক্রেতা শরিফুল মিয়া বলেন, ‘খালি আড়ত থেইকা ডাব কিইন্যা আইনা বেইচা দিলাম, বিষয়টা এই রকম না। দোকান বসাইতে খরচ এক শ টাকার বেশি। ডাবের খোসা ফেলানোর লাইগা আলাদা ট্যাকা দিতে হয়। বাজারের দুই–একজন নেতা ডাব খাইয়া পয়সা দেয় না। এই সবকিছু বাদ দিয়া লাভের ট্যাকা উঠে।’

সব বিক্রেতাই বললেন, বৃষ্টির দিনে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা আবহাওয়ায় ডাব বিক্রি কমে যায়। গরম বাড়লে বিক্রির সঙ্গে লাভও বাড়ে এবং তা কখনো কখনো হাজার টাকাতেও পৌঁছায়।

আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন গতকাল প্রথম আলোকে জানান, আপাতত বৃষ্টির তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। আরও সাত দিন বৃষ্টির প্রবণতা কম থাকবে।

বৃষ্টির সম্ভাবনা যেহেতু কম, সেহেতু গরম বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি। সুতরাং ডাব কিনতে গেলে বাড়তি দাম দিতে হবে ক্রেতাদের।