কাকলীতে এক মাসেও মেরামত হয়নি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীছাউনি

ঝোড়ো বাতাসে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া যাত্রীছাউনিটি এখনো মেরামত হয়নি। সম্প্রতি কাকলীতে।
ঝোড়ো বাতাসে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া যাত্রীছাউনিটি এখনো মেরামত হয়নি। সম্প্রতি কাকলীতে।

‘নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ (কেইস)’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে কাকলী বাসস্ট্যান্ডে নির্মিত যাত্রীছাউনি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার এক মাস পরও মেরামত করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

গত ৩১ মার্চ সন্ধ্যার ঝোড়ো বাতাসে যাত্রীছাউনিটির সব কটি ছাউনি উড়ে যায়। ছাউনির ওপরেই প্রকল্পের নাম লেখা সাইনবোর্ডের এক পাশও ঝোড়ো বাতাসে ভেঙে গিয়েছিল তখন। উড়ে যাওয়া ছাউনির অংশটি মেরামত না করায় পুরোটাই এখন ফাঁকা হয়ে আছে। ছাউনি না থাকায় যাত্রীরাও কেউ সেটি ব্যবহার করছেন না।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দেখা যায়, নতুন নির্মিত যাত্রীছাউনিটির নিচে গাড়ির জন্য অপেক্ষমাণ কোনো যাত্রীই নেই। পুরো যাত্রীছাউনির বসার আসনগুলোও ফাঁকা পড়ে আছে। ওপরে ছাউনি না থাকায় রোদের উত্তাপ সরাসরি বসার বেঞ্চগুলোয় এসে পড়ছে। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ছাউনির কিছু অংশ দেখা গেল ঠিক পেছনেই। ঝড়ের পরদিন সকালে স্থানীয়রাই এ রকম দু-একটি অংশ তুলে এনে রেখে দিয়েছেন সেখানে। উত্তর পাশে অপর একটি পুরোনো ছোট যাত্রীছাউনিতে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। সেখানে যাত্রীদের বসার জায়গা পরিপূর্ণ। বসার জায়গা না থাকলেও ছাউনির নিচে একটু ছায়ার আশায় সেখানে দাঁড়াতেও ভিড় করছিলেন অনেকে।

যাত্রীছাউনিটির পাশের এক চা দোকানদার বলেন, এক মাস আগের কালবৈশাখীর সময় সব কটি ছাউনিই বাতাসে উড়ে যায়। এরপর থেকেই ওপরের দিকটা ফাঁকা হয়ে আছে।

উত্তরায় যেতে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা রিয়াদ হোসেন বলেন, নতুন যাত্রীছাউনি, অথচ ছাউনি না থাকায় কেউ সেটি ব্যবহারই করছেন না। তিনি বলেন, ‘ঝড়ের পরদিন এসে দেখি ওপরের দিকটা ফাঁকা। এরপর থেকেই যাত্রীছাউনিটা ফাঁকা পড়ে থাকে। ছায়া নেই বলে সেটা কেউ ব্যবহার করছে না।’

কেইস প্রকল্পের পরিচালক সিরাজুল ইসলামকে ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীছাউনির বিষয়ে গত ২৭ এপ্রিল জানান এই প্রতিবেদক। তখন তিনি ঠিকাদারকে বলে যাত্রীছাউনিটি দ্রুত মেরামত করার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। পরে তিনি কেইস প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

গত বৃহস্পতিবার মফিজুর রহমান বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীছাউনিগুলো নির্মাণকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পুনরায় মেরামত করে দেওয়ার কথা। ক্ষতিগ্রস্ত অন্য ছাউনিগুলো ইতিমধ্যে মেরামত হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এখনই খোঁজ নিয়ে দেখছি, কাকলীর ক্ষতিগ্রস্ত ছাউনিটি কেন এখনো মেরামত করা হয়নি।’ কিছুক্ষণ পরই তিনি আবার ফোন করে প্রতিবেদকের কাছে জানতে চান, প্রতিবেদক শেষ কবে যাত্রীছাউনিটি সরেজমিনে দেখেছেন? কারণ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যাত্রীছাউনিটি মেরামত করা হয়ে গেছে বলে তাঁকে খুদেবার্তা পাঠিয়েছেন।

অথচ বৃহস্পতিবার প্রতিবেদক দেখতে পান, প্রকল্পের নাম লেখা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যানারটি শুধু মেরামত করা হয়েছে। ব্যানারটির এক পাশ ভেঙে গিয়েছিল। তবে ছাউনির জায়গাগুলো আগের মতোই ফাঁকা হয়ে আছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভূঁইয়া অ্যান্ড কোম্পানির মালিক নুরু ভূঁইয়া এবং প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি।