স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে ১২ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস

চুয়াডাঙ্গায় বিজিবি-৬ ব্যাটলিয়ন সদর দপ্তর মাঠে মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ অনু্ষ্ঠানে মাদক ধ্বংস করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। ছবি: শাহ আলম
চুয়াডাঙ্গায় বিজিবি-৬ ব্যাটলিয়ন সদর দপ্তর মাঠে মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ অনু্ষ্ঠানে মাদক ধ্বংস করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। ছবি: শাহ আলম

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, মাদকের ছোবল থেকে আমাদের যুব সমাজকে আমরা রক্ষা করতে পারছি না। আমাদের যুব সমাজ আমাদের নতুন প্রজন্মকে যদি আমরা রক্ষা করতে না পারি,বাংলাদেশের পথ হারিয়ে যাবে।

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গায় বিজিবি-৬ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর মাঠে মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। বিজিবি দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়ন ওই অঞ্চলে আটককৃত মাদক ধ্বংসের জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এদিন ১২ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ধ্বংস করা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ভয়ানক নেশাজাতীয় জিনিস আসে। আমরা বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করছি। জনবল ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করছি। সীমান্তে পরীক্ষামূলকভাবে সেন্সর বসিয়ে অপরাধীদের গতিবিধি খেয়াল রাখা হচ্ছে।

মন্ত্রী মাদকের সঙ্গে জড়িতদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কেউ যদি ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান, তাদের ক্ষমা করব এবং লক্ষ্য করব তারা কি করছে। আর, ক্ষমা না চেয়ে ভুল স্বীকার না করে এ পথেই থেকে গেলে কঠিন থেকে কঠিনতর ব্যবস্থা নিতে হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন,আমাদের দেশে বা সীমান্তবর্তী এলাকায় কোনো আইএস নেই। এটা একটি আন্তর্জাতিক চক্রান্ত। এ দেশে যারা পথ হারিয়ে ফেলেন, তাঁরা নিজেদের হিরো বানানোর জন্য অনেক কিছুই করে থাকেন। আসলে আইএসের সঙ্গে তাঁদের সম্পৃক্ততা নাই। জনগণ এখন আর সন্ত্রাসকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী অত্যন্ত দক্ষ ,তাঁরা সক্ষম। আমাদের গোয়েন্দাবাহিনীও সচল রয়েছে। আমি মনে করি আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী শুধু দক্ষ নয়, দেশপ্রেমেও তাঁরা উদ্বুদ্ধ।

বিশেষ অতিথি বিজিবি মহাপরিচালক মো. সাফিনুল ইসলাম বলেন, এ দেশের বিশাল সীমান্ত দিয়ে মাদকদ্রব্য চোরাচালান প্রতিরোধ করা এই বাহিনীর জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। আমরা এই বিষয়টিকে আমাদের পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্ব বলেও মনে করি। নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে মানবসম্পদ আজ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। আমাদের সবার দায়িত্ব মাদকমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। পিতা-মাতা,শিক্ষক এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। মাদক বিনোদনের মাধ্যম নয় এটি আত্মহননের পথ। জীবনকে হ্যাঁ এবং মাদককে না বলুন।

স্বাগত বক্তব্যে বিজিবির দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়নের অতিরিক্ত মহাপরিচালক রিজিয়ন কমান্ডার মো. আইনুল মোর্শেদ খান পাঠান বলেন, মাদকমুক্ত সমাজ মানে অপরাধমু্ক্ত সমাজ। সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পারিবারিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ সৃষ্টির মাধ্যমে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করেছি। মাদক দেশের উন্নয়নে বিরাট অন্তরায়। আসুন সম্মিলিতভাবে এই বাধাকে দূর করি। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাংসদ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার , চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাংসদ আলি আজগার টগর, ডেপুটী রিজিয়ন কমান্ডার আমিরুল ইসলাম ,খুলনা সেক্টর কমান্ডার মো. আরশাদুজ্জামান ,কুষ্টিয়া সেক্টর কমান্ডার বেনজীর আহমেদ ,বিজিবি-৬ এর পরিচালক ইমাম হাসান মৃধা,জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস ও পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান।