এসএসসি পাস শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী

এসএসসির ফলাফল প্রকাশের পর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের উল্লাস। বেইলি রোড, ঢাকা, ৬ মে। ছবি: আবদুস সালাম
এসএসসির ফলাফল প্রকাশের পর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের উল্লাস। বেইলি রোড, ঢাকা, ৬ মে। ছবি: আবদুস সালাম

এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক এবং শিক্ষকদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এই শুভেচ্ছা জানান। তবে ফলাফল প্রকাশের সময় দেশে থাকতে না পারায় শিক্ষার্থীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় এ বছর গড় পাসের হার ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ৫৯৪ জন।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আজ বেলা ১১টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব সোহরাব হোসাইনসহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন। এরপর লন্ডনে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন করে পাস করা শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান। যারা উত্তীর্ণ হতে পারেনি, তাদের ধৈর্য ধরে মনোযোগসহকারে পুনরায় প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।

রেওয়াজ অনুযায়ী প্রতিবছর ফলাফল ঘোষণার দিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে দেন বোর্ডের চেয়ারম্যানরা। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যানরা শিক্ষামন্ত্রীর হাতে ফলাফল তুলে দেন।

বাণীতে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ ২০১৯ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে আমি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক এবং শিক্ষকমণ্ডলীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। যেসব শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হতে পারোনি, আমি তোমাদের ধৈর্য ধরে, মনোযোগসহকারে আবার প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে ভবিষ্যতে ভালোভাবে উত্তীর্ণ হতে পারো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের অসাধ্য কিছুই নেই। একাগ্রতা, অধ্যবসায় এবং পরিশ্রম যেকোনো অসাধ্যকে সাধন করতে সহায়তা করতে পারে। তোমরা যারা যেকোনো কারণেই হোক উত্তীর্ণ হতে পারোনি, তাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এখন থেকে চেষ্টা করলে ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই তোমরা এ বাধা অতিক্রম করে ভালো ফল অর্জন করতে পারবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ বছর রেকর্ডসংখ্যক শিক্ষার্থী এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। যেসব শিক্ষার্থী ভালো ফল করেছ, তোমাদের এই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে ভবিষ্যতে আরও ভালো ফল করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মনে রাখবে, তোমরাই আগামীর বাংলাদেশের কর্ণধার। তোমাদেরই এ দেশের জনগণ এবং বিশ্ববাসীর সেবায় নিয়োজিত হতে হবে। এ জন্য জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তি আয়ত্তের পাশাপাশি দেশপ্রেমিক এবং মানবিকতায় পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা আমাদের মহান স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তাঁর স্বপ্ন ছিল মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি আনয়নের মাধ্যমে ক্ষুধা-দারিদ্র্য–নিরক্ষরতামুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার। আমরা জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আগামী প্রজন্মকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপযোগী করে গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবছর আমি সশরীরে উপস্থিত থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করি এবং তোমাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করি। এ বছর আমি লন্ডন সফরে থাকার কারণে এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলাম। এ জন্য আমি তোমাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, তোমরা তোমাদের মেধা-মননের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে নিজেদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে এবং আগামীতে দেশ পরিচালনার জন্য নিজেদের যোগ্য করে প্রস্তুত করবে—এই প্রত্যাশা করছি।’