সিলেটের ঢাউস কমিটিগুলো ছোট করবে বিএনপি

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সিলেট জেলা বিএনপির কার্যকরী কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৫১ জন হওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে আছেন ২৮৫ জন। 'ঢাউস' এই কমিটি ভবিষ্যতে পরিবর্তন করে ১৫১ জন রাখা হবে। সেই সঙ্গে উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড কমিটিতে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সদস্য রাখা হবে।

গত রোববার অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির কার্যকরী কমিটির সভায় তৃণমূল থেকে জেলা কমিটি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। নগরের সোবহানীঘাট এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে বেলা তিনটা থেকে টানা চার ঘণ্টা চলে ওই সভা।

জেলার সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদের সঞ্চালনায় সভায় জেলা, উপজেলা ও পৌর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১৫৬ জন বিএনপি নেতা অংশ নেন। বক্তব্য দেন ৩৪ নেতা।

সূত্র জানায় সভায়, নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বে সংগঠন পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। নেতৃত্বের কোন্দল এড়ানোর কৌশলে বড় কমিটি ও বিভিন্ন স্তরের নেতাদের কমিটিতে অন্তভুক্ত করার বিষয়টি বাদ দিয়ে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এতে শুরুতে জেলার ২৮৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি বাদ দিয়ে ভবিষ্যতে ১৫১ সদস্যের কমিটি এবং উপজেলা ও পৌরসভায় ১০১ এবং ইউনিয়নগুলোতে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, নতুন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে কাউন্সিল ও সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কমিটিতে স্থান পাওয়াদের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিগত দিনে নির্যাতিত ও ত্যাগী নেতাদের অন্তভুক্ত করার বিষয়টিও প্রাধান্য পায়।

বিএনপি সূত্র জানায়, জাতীয় নির্বাচনের ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই শুরু হয়ে পড়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। সে নির্বাচনে বিএনপি দলীয়ভাবে অংশগ্রহণ না করায় তৃণমূলেও দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় নির্দেশে সিলেটে বিএনপি দল পুনর্গঠনে উদ্যোগী হয়। এরই অংশ হিসেবে গত মাসে মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত হয়। হবিগঞ্জে জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর চলতি মাসের মধ্যেই দলের সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা ‘পুনর্গঠন’ করা হবে। পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনেরও নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

দলীয় সূত্র জানায়, গত ৮ এপ্রিল বিএনপির সিলেটের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে স্কাইপে বৈঠক করেন। বৈঠকে তারেক দলের সাংগঠনিক অবস্থার খোঁজ-খবরের পাশাপাশি জেলার আওতাধীন ১৭টি উপজেলা ও পৌর ইউনিটের নতুন কমিটি গঠনের ব্যাপারে মতামত ব্যক্ত করেন। আগামী ১৫ মের মধ্যে জেলা কার্যকরী কমিটির সভা ডেকে ইউনিটভুক্ত কমিটিগুলো পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে কেন্দ্রে রিপোর্ট পাঠানোরও নির্দেশনা দেন তিনি।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুযায়ীই রোববার জেলার কার্যকরী কমিটির সভা হয়।