বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা: জিপিএ-৫ পেল তাওসিফ

বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দেওয়া ইফতি এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দেওয়া ইফতি এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

বাবার লাশ বাড়িতে রেখে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল ইফতি আকবর তাওসিফ। কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার শিলখালী উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সেই তাওসিফ এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা ছিল তাওসিফের। সেদিন ভোরেই তার বাবা নাজিম উদ্দিন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এরপর সকাল নয়টার দিকে তাঁর লাশ পেকুয়া উপজেলার পূর্ব গোঁয়াখালীতে তাঁর নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। নাজিম উদ্দিন পূর্ব গোঁয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।

সেদিন বাবার লাশ একনজর দেখেই পরীক্ষা দিতে এসেছিল তাওসিফ। সোমবার পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর অনুভূতি জানাতে গিয়ে তাওসিফ বলে, ‘যখন প্রাইমারিতে পড়ি তখন বাবা ক্লাসে সব সময় বলতেন, বাড়িতে কেউ মারা গেলেও তার লাশ এক পাশে রেখে ক্লাসে যেতে হবে, পরীক্ষা দিতে হবে। আল্লাহ বাবার সেই কথাটি আমার মাধ্যমেই বাস্তবায়ন করেছেন। জীবিত বাবার চেয়ে মৃত বাবা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন বেশি। পরীক্ষা দিয়ে আমি কাঙ্ক্ষিত ফল পেয়েছি। এ জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।’

চার ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় তাওসিফ এর আগে জেএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ সহ বৃত্তি পেয়েছিল। তার বড় ভাই ফয়জুল আকবর তোয়াহা চট্টগ্রাম বিএএফ শাহীন কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে ও তৃতীয় ভাই তাহফিমুল আকবর চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে। সবার ছোট ভাই ইসরাক বিল্লাহর বয়স মাত্র চার বছর।

তাওসিফের চাচি ও তার বাবার ছাত্রী শাকেরা বেগম বলেন, ‘গোঁয়াখালী এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে স্যারের অবদান ছিল খুব বেশি। বিদ্যালয়টি বেসরকারি থাকা অবস্থায় আর্থিক অনটনের মধ্যেও স্যার নিয়মিত ক্লাস চালিয়ে নিতেন। স্যারের ছেলেরাও খুব মেধাবী। এখন সংগ্রাম চালাতে হবে যাতে বাচ্চাগুলোর পড়ালেখা চালিয়ে নেওয়া যায়।’