মহেশখালীর পাহাড় থেকে মালয়েশিয়াপ্রবাসী উদ্ধার, অস্ত্রসহ আটক ২

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

অপহরণের ১৫ ঘণ্টা পর কক্সবাজারের মহেশখালীর পাহাড়ি এলাকা থেকে আবদুল মন্নান (২৭) নামের এক মালয়েশিয়াপ্রবাসীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে ওই প্রবাসীকে উদ্ধার করে হয়। এ সময় পুলিশ ধাওয়া করে দুটি অস্ত্র, আটটি গুলিসহ দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে।

আটক হওয়া ওই দুই ব্যক্তি হলেন রুহুল কাদের (২৮) ও মোহাম্মদ আজিজ (৩০)। রুহুল কাদের ও মোহাম্মদ আজিজ উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।

অপহরণ হওয়া ওই প্রবাসীর বড় ভাই আবদুল শুক্কুর প্রথম আলোকে বলেন, গত সোমবার রাত দেড়টার দিকে চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ষ্টেশন থেকে সিএনজিযোগে মালয়েশিয়াপ্রবাসী আবদুল মন্নানসহ তিনজন বাড়িতে যাচ্ছিলেন। তবে কালারমারছড়া ইউনিয়নের চালিয়াতলি এলাকায় পৌঁছলে অপহরণকারীরা তাঁদের গাড়িটি আটক করে। এরপর মন্নানকে অপহরণ করে পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে যায়। পরে মুঠোফোনের মাধ্যমে মান্নানের পরিবারের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে মন্নানকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয় তারা।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে আবদুল শুক্কুর মহেশখালী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। ওই লিখিত অভিযোগ পেয়ে পুলিশ মন্নানকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে মাঠে নামে।

মহেশখালী থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রবাসী মন্নানকে উদ্ধারের জন্য মহেশখালী থানার ওসি প্রভাস চন্দ্র ধরের নেতৃত্বে পুলিশের দুটি দল মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় ছদ্মবেশে অভিযানে নামে। পরিকল্পনা অনুসারে তারা কালারমারছড়া ইউনিয়নের ফকিরজুমপাড়ার পূর্ব পাশে পাহাড়ের গহিন অরণ্যে ঢুকে পড়ে। এরপর ওই ছদ্মবেশ নেওয়া পুলিশের এক সদস্য অপহরণকারী দলের নির্দেশমতো স্থানে টাকা রেখে একটু দূরে লুকিয়ে থাকেন। পরে মন্নানকে সঙ্গে নিয়ে অপহরণকারীরা টাকা নিতে এলে পুলিশের দল তাদেরকে পেছন থেকে আক্রমণ করে। এ সময় তারা পুলিশের দিকে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া করে দুটি দেশীয় এলজি ও আটটি গুলি উদ্ধার করে এবং রুহুল কাদের ও মোহাম্মদ আজিজকে আটক করে। ওই ঘটনায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টায় অস্ত্র উদ্ধার ও অপহরণের বিষয়ে থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।

জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, ছদ্মবেশে পুলিশ সদস্যরা প্রথমে অপহরণকারী দলের সদস্যদের নির্দিষ্ট করে দেওয়া স্থানে মুক্তিপণের পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে আসেন। পরে ওই মুক্তিপণের টাকা নিতে অপহরণকারীরা পাহাড়ের মধ্য থেকে বেরিয়ে এলে পুলিশ ও অপহরণকারী দলের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে গোলাগুলির ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ১৭টি গুলি ছোড়া হয়। এ সময় অক্ষত অবস্থায় প্রবাসী মন্নানকে উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে দুটি অস্ত্র, আটটি গুলিসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে।