একসঙ্গে দুটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন তিনি

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আসছেন। তাঁর নাম আবদুল ওয়াহাব। তিনি একাধারে উপজেলার কুড়ালিয়াপটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও পাটাবুগা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলভি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকলেও নিয়মিত বেতন–ভাতা তুলছেন তিনি।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপার মো. আইয়ূব আলী এক বছর আগে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবদুল ওয়াহাব উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পাটাবুগা গ্রামের আলা উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে। তিনি ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর থেকে পাটাবুগা দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী মৌলভি শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন। ২০১৬ সালের ২৭ জুন তিনি উপজেলার আওনা ইউনিয়নের কুড়ালিয়াপটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে যোগ দেন। তিনি বিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার পর থেকে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত রয়েছেন। কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও তিনি নিয়মিত মাদ্রাসা থেকে তিন বছর ধরে বেতন–ভাতা তুলছেন।

পাটাবুগা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আইয়ূব আলী অভিযোগ করেন, শিক্ষক আবদুল ওয়াহাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার পর তাঁদের মাদ্রাসায় ৩৪ মাস ধরে অনুপস্থিত রয়েছেন। তিনি কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকলেও তাঁকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বেতন–ভাতা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকায় শিক্ষক ওয়াহাবকে দুবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কারণ, শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এ বিষয়ে এক বছর আগে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি।

একসঙ্গে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন সহকারী মৌলভি শিক্ষক আবদুল ওয়াহাব। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছি। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস করছি। তবে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত রয়েছি। শিগগিরই মাদ্রাসার চাকরিটা ছেড়ে দেব।’

জানতে চাইলে কুড়ালিয়াপটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবদুল জব্বার শিকদার গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবদুল ওয়াহাবকে মাদ্রাসার চাকরি ছেড়ে দেওয়ার জন্য চার দিন সময় দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক আবদুল ওয়াহাবের বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসার চাকরি ছেড়ে না দিলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।