ম্যাজিস্ট্রেট আসার খবরে হঠাৎ কমল পণ্যের দাম

একটু আগেই প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকা করে বিক্রি করছিলেন রেয়াজউদ্দিন বাজারের দোকানিরা। কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বাজার তদারকি দলের অভিযান হচ্ছে শুনেই তড়িঘড়ি করে মূল্যতালিকা সাঁটাতে থাকেন তাঁরা। সেই তালিকায় মাংসের দাম উল্লেখ করা হয় ৫৩০ টাক।

কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ৭০০ টাকা দামে গরুর মাংস কেনা কয়েকজন গ্রাহক তখনো যে বাজার ছিলেন। তাঁরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমানের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে দুটি দোকানকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। গতকাল সকালে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দেখে কম মূল্যের তালিকা সাঁটাতে পারে। তবে অভিযোগ পেয়েই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। নিয়মিত বাজার তদারকি দল পরিচালনা করা হবে। ফলে বেশি দামে বিক্রি করার সুযোগ পাবে না।’

বেশি দামে গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছিল অক্সিজেন এলাকার জাহাঙ্গীর মার্কেটের তিনটি দোকানেও। গতকাল গরুর মাংসের দাম নির্ধারিত ছিল ৫৩০ টাকা। কিন্তু ওই তিনটি দোকানে ৬০০ টাকা করে মাংস বিক্রি করা হচ্ছিল। সেখানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হাসানের নেতৃত্বে একটি বাজার তদারকি দল অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে এই অভিযোগের প্রমাণ পায়। বেশি দামে গরুর মাংস বিক্রি করায় তিনটি দোকানকে ৩ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া একই অভিযানে আরও তিনটি সবজি দোকানকে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করায় ২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, কৃষি বিপণন কেন্দ্রে থেকে প্রতিদিন বাজারের পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সেটি প্রতিদিন সকালেই প্রতিটি বাজার পরিচালনা কমিটির হাতে চলে যায়। সে হিসেবে গতকালকের গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয় ৫৩০ টাকা। কিন্তু ৭০ টাকা বেশি দামে মাংস বিক্রি করা হচ্ছিল অক্সিজেন এলাকার জাহাঙ্গীর মার্কেটে। এ জন্য এসব দোকানকে জরিমানা করা হয়েছে।

দুটি অভিযান পরিচালনা করার সময়েই বিক্রেতাদের সচেতন করা হয়। রমজানে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযানে বিএসটিআই ও ক্যাবের প্রতিনিধিসহ পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত রোববার রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে জেলা প্রশাসন একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেখানে বলা হয়, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত ও সরবরাহ রয়েছে। দৈনন্দিন চাহিদার অতিরিক্ত পণ্য ক্রয় না করার জন্য ক্রেতাদের পরামর্শ দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তিতে মেয়াদোত্তীর্ণ, অননুমোদিত ও নকল খাদ্যদ্রব্য আমদানি, প্রক্রিয়াজতকরণ, মজুত, সরবরাহ ও বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। পাশাপাশি তাঁদের বিষয়ে তথ্য দিতে সবাইকে অনুরোধও করা হয়।