এবার তিনি আর রক্ষা পেলেন না!

কৌশলে চুরি করতে গিয়ে অবশেষে ধরা পড়েছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ রেজাউল করিম। ছবি: এম রাশেদুল হক
কৌশলে চুরি করতে গিয়ে অবশেষে ধরা পড়েছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ রেজাউল করিম। ছবি: এম রাশেদুল হক

পোশাকে কিছুটা দারিদ্র্যের ছাপ থাকলেও চেহারায় ফুটে আছে আভিজাত্য। কথাবার্তা অনেক গোছালো ও মার্জিত। একে পুঁজি করেই দীর্ঘদিন ধরে কৌশলে চুরি করে যাচ্ছেন রেজাউল করিম নামের ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ। অবশেষে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই মাসের জন্য কারাগারে যেতে হলো তাঁকে।

রেজাউল করিম নওগাঁ জেলার নজিপুর উপজেলার মধুপুর গ্রামের বাসিন্দা।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এজাজ শফী জানান, গতকাল বিকেলের দিকে শহরের লোটাস কলেজিয়েট স্কুলে চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন রেজাউল করিম। রাজধানীর নামীদামি স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হয়েও বর্তমানে অসহায় জীবন যাপন করছেন বলে সবার কাছে প্রচার করেন তিনি। বিশেষ করে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে এসব কথা বলে সহমর্মিতা এবং আর্থিক সহায়তা আদায় করার চেষ্টা করেন। এরপর সুযোগ বুঝে অন্য শিক্ষকদের মুঠোফোন এবং নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে কৌশলে কেটে পড়েন।

উপজেলার পশ্চিম উজানচর নবুওছিমদ্দিনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবদুল হালিম প্রামাণিক বলেন, কয়েক দিন আগে রেজাউল করিম তাঁদের বিদ্যালয়ে সাহায্যের জন্য যান। তাঁর কথা শুনে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কাছ থেকে কিছু টাকা তুলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে অফিস কক্ষে এক শিক্ষিকা একা থাকায় উনি তাঁর কাছে পানি খেতে চান। শিক্ষিকা পানি আনতে গেলে ওই ব্যক্তি কৌশলে তাঁর মুঠোফোন সেটটি চুরি করে পালিয়ে যান।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, আটক ব্যক্তির হাতে যে মুঠোফোন সেটটি পাওয়া গেছে, সেটা পরীক্ষা করতে গিয়ে গ্যালারিতে উপজেলা প্রশাসনের একজন নারী কর্মীর অনেক ছবি দেখা যায়। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটি সম্প্রতি হারিয়ে গেছে। পরে তিনি ওই মুঠোফোন সেটটি নিজের বলে শনাক্ত করেন।

মো. আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, চেহারা ও কথাবার্তায় আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলে বর্তমানে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে তিনি মানুষের সহমর্মিতা আদায় করেন। এরপর সুযোগ বুঝে কৌশলে চুরি করেন মূল্যবান সব জিনিসপত্র। অপরাধ স্বীকার করায় দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে রাতেই তাঁকে রাজবাড়ী জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।