বাজারে মেহেরপুরের টসটসে লিচু

মেহেরপুরের ফলের দোকানগুলোতে আসা টসটসে লিচু কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। আজ বুধবার বেলা ১১টায় মেহেরপুর কাঁচাবাজার থেকে তোলা। ছবি: আবু সাঈদ
মেহেরপুরের ফলের দোকানগুলোতে আসা টসটসে লিচু কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। আজ বুধবার বেলা ১১টায় মেহেরপুর কাঁচাবাজার থেকে তোলা। ছবি: আবু সাঈদ

গ্রীষ্মের রসালো মিষ্টি ফল লিচু বাজারে উঠতে শুরু করেছে। সদ্য বাজারে ওঠা এই ফল কিনতে মানুষ ভিড় করছে মেহেরপুরের লিচুর দোকানগুলোতে। রোজার মাস, তার ওপর গরম; এমন সময়ে লিচুর কদরও রয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় এবং দাম ভালো পাওয়ায় ব্যবসায়ীরা এখনই লিচু বাজারে এনেছেন।

জ্যৈষ্ঠের ফল লিচু বৈশাখের শেষেই মেহেরপুর জেলার বাজারে উঠেছে। মিষ্টি স্বাদের স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত লিচু বিক্রিও হচ্ছে ভালো। তবে কৃষি অধিদপ্তরের বলছে, আরও ১৫ দিন লাগবে লিচু পুষ্ট ও স্বাদযুক্ত হতে। কিন্তু অনেকে বেশি দাম পাওয়ার আশায় আগাম লিচু তুলে এনেছেন বাজারে।

সম্প্রতি মেহেরপুর সদর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের বাগান থেকে বিক্রেতারা লিচু নিয়ে এসেছেন বিক্রির জন্য। গাছ থেকে সদ্য পেড়ে আনা লিচুগুলো রসে ভর্তি। মিষ্টি স্বাদের এসব লিচু ৮০টি বিক্রি হচ্ছিল ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। লোকমান মিয়া নামের একজন বিক্রেতা বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে মেহেরপুর জেলাজুড়ে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে কিছু কিছু বাগানে আগাম লিচু পাকতে শুরু করেছে। বাগান মালিকেরা লিচু নিয়ে বাজারে পাইকারি বিক্রি করছেন।

গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের একটি গ্রামের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গাছ থেকে লিচু পাড়ছেন কয়েকজন শ্রমিক। বাগানের মালিক সজিব মিয়া নিজে দাঁড়িয়ে থেকে লিচু পাড়ার তদারকি করছেন। তিনি বলেন, হঠাৎ বৃষ্টিপাত হওয়ায় বাগানের কয়েকটি গাছে লিচু পাকতে শুরু করেছে। আগাম লিচুর বাজারে দামও ভালো পাওয়া যায়। সে কারণে বাগানের দুটি গাছে লিচু পেড়ে বাজারে নেবেন। প্রতি ৮০টি লিচুতে এক থোকা হয়, যা স্থানীয়ভাবে ‘একপন’ হিসেবে বিক্রি হয়। বাজারে একপন দাম পড়ে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। সজিব মিয়ার বাগানে চায়না-১, চায়না-২, চায়না-৩ ও বোম্বাই জাতের লিচুর চারা লাগিয়েছেন। ২০১৬ সাল থেকে তাঁর বাগানে লিচুর ফলন আসছে। এ বছরে ১২৭টি গাছের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩০-টি গাছে লিচু এসেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আখতারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, মেহেরপুরের আম ও লিচুর স্বাদ অন্যান্য এলাকা থেকে একটু বেশিই। চলতি বছরের মেহেরপুরের তিন উপজেলাতে ৫৭৭ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। হেক্টর প্রতি ৮ মেট্রিকটন লিচু উত্তোলন করা সম্ভব হবে। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।