' বউ ভাত দেয়নি, তাই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছি'

‘ভাত চেয়েছিলাম, কিন্তু বউ ভাত দেয়নি। রাগের মাথায় হাতের কাছে কেরোসিন ছিল, গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিই। পরে আগুন নেভাতে চেয়ে আর পারিনি।’ চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার রুমির আদালতে এ স্বীকারোক্তি দেন অংসিদু মারমা। স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে গ্রেপ্তার হওয়া অংসিদু মঙ্গলবার বেলা তিনটায় আদালতে এ স্বীকারোক্তি দেন।

অংসিনু মারমার (৪৫) বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের দুর্গম আদিবাসী পল্লির বড়খোলা পাড়ায়। তাঁর স্ত্রী নিহত মাসিং প্রু মারমার (৪০) বাপের বাড়িও একই এলাকায়।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের বড়খোলা আদিবাসীপাড়ার দিনমজুর অংসিনু মারমা ভাত না পেয়ে স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর অংসিনু সেটা নেভাতে চেষ্টা করেন। ততক্ষণে স্ত্রী মাসিংয়ের পুরো শরীরে আগুনে ধরে যায়। প্রতিবেশীরা বুঝতে পেরে মাসিং প্রুকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরদিন সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাসিং। পরে মাসিংয়ের ভাই বাদী হয়ে অংসিনু মারমাকে আসামি করে রাঙ্গুনিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। রাঙ্গুনিয়া থানা-পুলিশ রাতে অংসিনু মারমাকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে স্ত্রী হত্যা দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। রাতে মাসিং প্রু মারমার লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর বাড়ি বড়খোলা পাড়ায় দাহ করা হয়েছে।

বড়খোলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও আদিবাসী নেতা অনন্ত মারমা প্রথম আলোকে বলেন, অংসিনু মারমার দুই ছেলে, দুই মেয়ে। তাঁদের পরিবারের অবস্থা তেমন ভালো নয়। অভাব-অনটনের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে।

রাঙ্গুনিয়া থানার শিক্ষানবিশ উপপরিদর্শক (পিএসআই) মো. হাসানুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাগের মাথায় স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার কথা আসামি অংসিনু আদালতে স্বীকার করেছে।’