ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আজও যানজট

সকাল ১০টার দিকে যানজটে স্থবির ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে, দাউদকান্দি উপজেলা, কুমিল্লা, ৯ মে। ছবি: আবদুর রহমান
সকাল ১০টার দিকে যানজটে স্থবির ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে, দাউদকান্দি উপজেলা, কুমিল্লা, ৯ মে। ছবি: আবদুর রহমান

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তৃতীয় দিনের মতো যানজট চলছে। প্রায় ৩৩ কিলোমিটার এলাকায় যানজট রয়েছে। যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার পুটিয়া থেকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মেঘনা সেতু এলাকা পর্যন্ত যানজট লক্ষ করা গেছে।

গত সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে এই যানজট শুরু হয়।

ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে পড়া মালবাহী যানবাহন চলতে শুরু করায় মহাসড়কে চাপ বেড়েছে। এ ছাড়া মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীর ওপর দ্বিতীয় সেতুর সংযোগের কাজের কারণে মহাসড়ক সংকুচিত হওয়ায় যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে বলা জানা গেছে।

পবিত্র রমজানের মধ্যে যানজট ও প্রচণ্ড গরমে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে রোগী, নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

আজ সকাল ১০টার দিকে দাউদকান্দি উপজেলার পেন্নাই, গৌরীপুর, আমিরাবাদ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, যানজটে আটকে থেকে অনেক চালক ও যাত্রী ঘুমিয়ে পড়েছেন।

ঢাকাগামী হিমাচল বাসের যাত্রী চান্দিনার আড়ং গ্রামের ইউনুস ভূঁইয়া সকাল ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, সকাল আটটায় ঢাকায় চিকিৎসক দেখানোর কথা ছিল। এ জন্য ভোর ছয়টায় বাসে ওঠেন। দেড় ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছার কথা ছিল। কিন্তু দাউদকান্দির হাসানপুর এলাকায় যানজটে আটকে আছেন তিনি। কখন ঢাকায় পৌঁছাবেন, তা বুঝতে পারছেন না।

সকাল ১০টার দিকে যানজটে স্থবির ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে, দাউদকান্দি উপজেলা, কুমিল্লা, ৯ মে। ছবি: আবদুর রহমান
সকাল ১০টার দিকে যানজটে স্থবির ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে, দাউদকান্দি উপজেলা, কুমিল্লা, ৯ মে। ছবি: আবদুর রহমান

ঢাকাগামী আল আরাফাহ পরিবহন বাসের যাত্রী নোয়াখালীর রামগঞ্জের গৃহবধূ হোসনে আরা আক্তার ও রহিমা আক্তার বলেন, ভোর চারটায় রামগঞ্জ থেকে বাসে উঠেছেন। সকাল ১০টায় ঢাকায় পৌঁছার কথা। কিন্তু দাউদকান্দিতে এসে যানজটে আটকে আছেন। সঙ্গে থাকা শিশু প্রচণ্ড গরমে কষ্ট পাচ্ছে।

ঢাকাগামী প্রিন্স পরিবহন বাসের যাত্রী কুমিল্লা সদরের ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, তিন দিন ধরে যানজট। কুমিল্লা থেকে ঢাকায় পৌঁছাতে দুই ঘণ্টার জায়গায় ১০ ঘণ্টা লাগছে।

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী এস আলম পরিবহন বাসের চালক মো. শামীম বলেন, যানজটের কারণে আটকে থেকে যাত্রীরা জরুরি কাজ সারতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

দাউদকান্দি পৌর সদরের ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা আক্তার ও সোনিয়া আক্তার বলেন, যানজটে আটকে পড়ে ৯ কিলোমিটার পথ হেঁটে তাঁদের কলেজে পৌঁছাতে হয়েছে।

ঢাকাগামী কাভার্ডভ্যানচালক রবিউল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে ঘুমানো ছাড়া উপায় নেই।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে মালবাহী অনেক যানবাহন আটকে ছিল। সেগুলো এখন একযোগে চলাচল করায় মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে। তা ছাড়া মেঘনা নদীর ওপর দ্বিতীয় সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ করায় মহাসড়ক সংকুচিত হওয়ায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে।