সিডনিতে স্ত্রী হত্যার দায়ে এক বাংলাদেশির ২৪ বছরের কারাদণ্ড

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে স্ত্রী হত্যার দায়ে এক বাংলাদেশির ২৪ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিচার শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। বিচারকার্যের শেষ দিনে বাংলাদেশি খন্দকার ফারিহা এলাহিকে ১৪ বার ছুরিকাঘাত করে হত্যা করার দায়ে আদালত তাঁর স্বামী শাহাব আহামেদকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

শাহাবের স্বীকারোক্তি ও সব তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত রায়ে বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফারিহাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। তবে নিহত ফারিহার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে সৃষ্ট পারিবারিক কলহের ফলে শাহাবের মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হওয়াকে বিবেচনায় রেখেই আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিডনির প্যারামাটায় নিজ বাসায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলীয় নাগরিক শাহাব আহামেদ তাঁর স্ত্রী খন্দকার ফারিহা এলাহিকে ছুরিকাঘাত করে মারাত্মক জখম করেন। স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে—এমন সন্দেহের জের ধরে প্রথমে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় ফারিহার ফোনে তাঁর সহকর্মী ওমর খানের ‘আপত্তিকর’ এসএমএস দেখতে পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন শাহাব। একপর্যায়ে রান্না ঘর থেকে ছুরি এনে ১৪ বার ফারিহাকে আঘাত করেন তিনি। এর প্রায় ১০ মিনিট পর মারা যান ফারিহা। এরপর নিজেই পুলিশে ফোন করে আত্মসমর্পণ করেছিলেন শাহাব।

গত এপ্রিলে মামলার শুনানিতে অভিযুক্ত শাহাব আহমেদকে স্ত্রী হত্যার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত না করলেও মানুষ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করে মামলা বহাল রাখেন আদালত। গতকাল বুধবার মামলার শেষ শুনানি শুরু হলে শাহাবকে স্ত্রী হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হিসেবে গণ্য করেন বিচারক। আদালত জানান, মানসিক সমস্যার কারণে অনিচ্ছাকৃতভাবে ফারিহাকে ছুরিকাঘাত করলেও তাঁকে বাঁচানোর কোনো চেষ্টা করেননি শাহাব। বরং ফারিহার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করেছেন। এরপর তিনি পুলিশ ডেকেছেন।

সহকর্মী ওমর খানের সঙ্গে ফারিহার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল এবং সেটিকে হত্যার উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচনা করেছেন আদালত। একই সঙ্গে বিষয়টি শাহাবের মানসিক সমস্যা সৃষ্টির কারণ হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। এসব কারণে হত্যার উদ্দেশ্যে ফারিহাকে ছুরিকাঘাত করা হয়নি—শাহাবের এমন স্বীকারোক্তি গ্রহণ করেন আদালত। তবে ফারিহাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়নি বলে ফারিহা হত্যার দায়ে শাহাবকে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করে ২৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।