বিমানটি আর উড়তে পারবে না, আহতরা শঙ্কামুক্ত

ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ।
ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ।

মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজটি আর আকাশে উড়তে পারবে না। অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষতিই এর কারণ।

বিমানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারহাত হাসান জামিল গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, উড়োজাহাজটি আর দেশে আনা সম্ভব হবে না।

ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানান, আহত ২০ জন যাত্রী ইয়াঙ্গুনের দুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁদের মধ্যে ১৪ জন বাংলাদেশের নাগরিক। অন্যদের তিনজন চীনের, দুজন মিয়ানমারের এবং একজন ভারতের নাগরিক। তাঁদের মধ্যে চারজন ছাড়া অন্যদের শুক্রবার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।

বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে বুধবার গভীর রাতে বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মিয়ানমারে যান। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্ঘটনাকবলিত উড়োজাহাজটি তিন টুকরো হয়ে গেছে। এর দুটি ডানা ও সামনের চাকা ভেঙে গেছে। পেছনের অংশও বেঁকে গেছে।

ঢাকায় বিমানের কর্মকর্তারা বলেছেন, বুধবার সন্ধ্যায় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়া উড়োজাহাজটির ব্যাপক ক্ষতি হলেও এতে যাত্রীসহ ৩৩ আরোহীর সবাই প্রাণে বেঁচে যাওয়াটা স্বস্তিদায়ক। উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়ে তিন টুকরা হয়ে গেছে। কিন্তু চার ক্রুসহ আরোহীদের কেউ গুরুতর আহত হননি।

বিমানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্ঘটনাকবলিত উড়োজাহাজটির পাইলট শামীম নজরুলসহ অন্য চার ক্রুকে দেশে ফেরত আনা হবে। পাইলট শামীম নজরুলের মাথা ফেটে যাওয়ায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। কো-পাইলট আনোয়ার পারভেজ ও কবিরুল হক খানও বেশ আঘাত পেয়েছেন। ক্রু ফারজানা গাজীর বুকের হাড় ভেঙেছে, কোমরেও আঘাত পেয়েছেন। তাঁদের দেশে এনে পরে ব্যাংককে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হতে পারে। ফারহাত জামিল জানান, ইয়াঙ্গুনে পাইলটসহ ক্রুদের চিকিৎসা চলছে। তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার পর আরও উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিমানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদেশি যাত্রীদের গন্তব্য ছিল মিয়ানমার। আর বাংলাদেশি যাত্রীদের একটি বড় অংশ গিয়েছিলেন একটি ব্যবসায়িক সেমিনারে অংশ নিতে। রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান জানান, আহত যাত্রীদের মধ্যে যাঁরা ঢাকায় ফিরতে চান, তাঁদের জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

ইয়াঙ্গুনে বিমানের ওই দুর্ঘটনা শুধুই কি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নাকি এর সঙ্গে যান্ত্রিক ত্রুটিও আছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বিমানের চিফ অব ফ্লাইট সেফটি ক্যাপ্টেন শোয়েব চৌধুরীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ।