কদমতলীতে দুই সপ্তাহ ধরে পানি নেই

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

কদমতলীর জনতাবাগ, গ্যাস রোড ও মসজিদ রোডের বিভিন্ন বাসাবাড়িতে দুই সপ্তাহের বেশি হলো ওয়াসার লাইনে পানি আসে না। অনেক বাসিন্দা বাধ্য হয়ে রাস্তা খুঁড়ে ওয়াসার লাইন ফুটো করে পাইপ বসিয়ে বাসাবাড়িতে পানি নিচ্ছেন। কিন্তু তা দিয়েও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ সারা যায় না।

অনেকে আবার জারের পানি কিনে এবং ওয়াসার গাড়িতে করে পানি কিনে দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাচ্ছেন।

জনতাবাগের বাসিন্দা শাহজাহান বলেন, ‘আগে ঠিকঠাক পানি পেতাম। পানিতে গন্ধও ছিল না। তারপর ধীরে ধীর লাইনে পানি কমতে থাকল। আর এখন দুই সপ্তাহ ধরে লাইনে পানিই নেই। ফলে বহুতল ভবনের সব ভাড়াটে কষ্টে আছেন। কেউ কেউ আশপাশে আত্মীয়স্বজনদের বাসায় গিয়ে গোসলসহ অন্য কাজ করছেন।’

জনতাবাগ, গ্যাস রোড ও মসজিদ রোডে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। সেখানে কয়েকটি বাড়িতে দিনে সামান্য সময়ের জন্য ওয়াসার লাইনে পানি যায়। অধিকাংশ বাড়িতে তীব্র পানিসংকট চলছে। পানির সমস্যা শুরুর পর স্থানীয় বাসিন্দারা ওয়াসার সঙ্গে যোগাযোগ করলে পরিদর্শন করা হবে বলে আশ্বাস দেন সংস্থাটির স্থানীয় কর্মকর্তারা। তবে ওয়াসার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ এসব এলাকা পরিদর্শনে আসেননি বলে জানান স্থানীয় লোকজন। সম্প্রতি ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গ্যাস রোডের রাস্তা খুঁড়ছেন কয়েকজন শ্রমিক। জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, রাস্তা খুঁড়ে ওয়াসার মূল সরবরাহ লাইন থেকে বাসাবাড়িতে পানি নিচ্ছেন কিছু বাসিন্দা। জনতাবাগ, গ্যাস রোড ও মসজিদ রোডের বাসিন্দাদের বাড়িতে এভাবেই পানি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্যাস রোড থেকে যাঁরা এভাবে পাইপ টেনে বাসায় নিয়েছেন, তাঁরা একটু পানি পাচ্ছেন। আর বাকিদের লাইনে পানি নেই।

গ্যাস রোডের ১৭০৪ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘আমার পাঁচতলা বাড়ি। ১০টি পরিবার সেখানে থাকে। পানি না থাকায় খুব কষ্টে আছি আমরা। ওয়াসার গাড়ির মাধ্যমে পানি কিনতে চেয়েছিলাম। যেদিন পানির চাহিদা দেওয়া হয়, সেই দিন পাওয়া যায় না। বলা হয়, পরের দিন পাওয়া যাবে। আবার বেশি টাকা দিলে তখন পানি দেয়।’

পানিসংকটের এলাকাগুলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৬০ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়েছে। কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, পাম্পের যা ধারণক্ষমতা, তার থেকে এলাকায় ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে। তাই সমস্যা হচ্ছে।

জানা যায়, ২০১৬ সালের মে মাসে জনতাবাগে একটি পানির পাম্প স্থাপন করা হয়। তখন এর উৎপাদনক্ষমতা ছিল মিনিটে ১ হাজার ৯০০ লিটার। তখন এলাকার বাসিন্দারা সবাই ঠিকভাবেই পানি পেতেন। তবে ওই সব এলাকায় কিছু বাড়ি তুলনামূলক উঁচু জায়গায়। সেখানে লাইনের পানি যেতে সমস্যা হয়।

জনতাবাগ পানির পাম্পের অপারেটর রসুল মাহমুদ বলেন, আগের মতো এখনো মিনিটে ১ হাজার ৯০০ লিটারই উৎপাদন হচ্ছে। তবে গরম পড়লে পানির ব্যবহার বেড়ে যায়। এতেই পানির সংকট তৈরি হয়।

কদমতলীর জনতাবাগ, গ্যাস রোড ও মসজিদ রোড ওয়াসা মডস জোন-৭-এর অন্তর্ভুক্ত। এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবিদ হোসেন বলেন, ‘গরমে সব জায়গায় পানি সমস্যা না হলেও কিছু কিছু জায়গায় হচ্ছে। তবে কদমতলী এলাকার ব্যাপারটি জানা ছিল না। আমি ওই সব এলাকা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’