এক শিশুর পেটে মিলল আরেক শিশুর শরীরের অংশ

ঠাকুরগাঁওয়ে ১২ বছর বয়সী এক শিশুর পেটে থাকা টিউমারের ভেতর থেকে অপর এক শিশুর শরীরের অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটে। মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায়ই অন্য একটি যমজ শিশু তার পেটে ঢুকে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জেলার সদর উপজেলার রহিমানপুর গোয়ালপাড়া এলাকার বাবুল রায়ের ১২ বছর বয়সী মেয়ে বীথিকা রায় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। বেশ কিছুদিন থেকেই শিশুটির মধ্যে বেশ কিছু শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ করছিলেন পরিবারের সদস্যরা। পেট ফুলে যাওয়াসহ মাঝেমধ্যে পেটে ব্যথা অনুভব করত শিশুটি। গ্যাসট্রিকের সমস্যা মনে করে ওষুধও খাওয়ানো হয় তাকে। এতেও কোনো প্রতিকার না হওয়ায় হাসপাতালে নেওয়া হয় শিশুটিকে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক জানান, শিশুটির পেটে বড় আকারের টিউমার রয়েছে।

এরপর শুক্রবার রাতে অস্ত্রোপচার করে শিশুটির পেট থেকে প্রায় চার কেজি ওজনের একটি টিউমার বের করা হয়। টিউমারটি দেখতে অস্বাভাবিক হওয়ায় কৌতূহল জাগে চিকিৎসকের। পরে টিউমারটিকে কেটে এর ভেতর আরেকটি শিশুর শরীরের অংশবিশেষ দেখতে পান তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুজ্জামান জুয়েল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাক্তারি ভাষায় এ ধরনের রোগকে “ফেটাস ইন ফেটু” বলে। শিশুটির মায়ের পেটে দুটি বাচ্চা একসঙ্গে ছিল। কিন্তু মায়ের পেটে থাকা অবস্থায়ই একটি বাচ্চা আরেকটির পেটে ঢুকে যায়। ফলে একটি বাচ্চা স্বাভাবিকভাবে ভূমিষ্ঠ হয়, আর তার পেটের ভেতর ঢুকে যাওয়া অন্য বাচ্চাটি আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। শিশুটি বর্তমানে শঙ্কামুক্ত রয়েছে। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে শিশুটি বাড়ি ফিরতে পারবে।’