বোরহানউদ্দিনে পন্টুনে লঞ্চের ধাক্কা, আহত অন্তত ৩২ যাত্রী

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিমুদ্দিন পন্টুনে লঞ্চের ধাক্কায় অন্তত ৩২ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে কর্ণফুলী-১৩ নামক লঞ্চের ধাক্কায় এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

আহত ব্যক্তিদের ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। লঞ্চের এই ধাক্কায় পন্টুন ও আশপাশের দোকানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএর ভোলায় কর্মরত নৌ–নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের পরিদর্শক নাসিম আহমেদ বোরহানউদ্দিন থানায় এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ–পরিবহন কর্তৃপক্ষ কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। যাতে লিখেছেন, লঞ্চের মাস্টারের স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে লঞ্চ এ দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, জিডি ও পরিদর্শকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ক্ষমতার প্রভাবে কর্ণফুলী লঞ্চের চালক-মাস্টার এ নৌপথে বেপরোয়া লঞ্চ চালাচ্ছেন। শুক্রবার রাতে কর্ণফুলী-১৩ লঞ্চটি কয়েক শ যাত্রী নিয়ে এসে ভোলার বোরহানউদ্দিনের হাকিমুদ্দিন লঞ্চঘাটের পন্টুনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এ সময় লঞ্চের ও পন্টুনের ৩৪-৩৫ জন যাত্রী ছিটকে তীরের ব্লকের ওপর ও নদীতে পড়ে যান। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন বেশ কিছুক্ষণ নিখোঁজ ছিলেন। সকাল নাগাদ সব যাত্রীকে পুলিশ, কোস্টগার্ড ও স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে ভোলা সদর ও বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেন। তাঁদের মধ্যে মো. ফারুক, মো. শাকিল, মো. নুরুদ্দিন, মো. হারুন, মো. হানিফ ও মো. মিরাজের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

প্রতিবেদনে পরিদর্শক আরও লিখেছেন, লঞ্চের ধাক্কায় পন্টুনটি নির্ধারিত স্থান থেকে ১০-১২ হাত সরে গেছে ও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবং ঘাটের একটি দোকানের মালামালের ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

পরিদর্শক আরও লিখেছেন, গত ১৫ এপ্রিল কর্ণফুলী-১২ নামক লঞ্চ লালমোহন লঞ্চঘাটে একই রকম ধাক্কা দিয়ে পন্টুনের ব্যাপক ক্ষতি করলেও কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়নি।

কর্ণফুলী-১৩ লঞ্চের মাস্টার মো. মোস্তফা বলেন, মেঘনার প্রত্যেকটি লঞ্চঘাটের পন্টুন বিকল। পন্টুনের সঙ্গে গ্যাংওয়ে নেই। দুর্বল দুই-একটি তক্তার ওপর দিয়ে যাত্রী লঞ্চে ওঠানামা করেন। এর মধ্যে জোয়ার-ভাটায় পন্টুন স্থান পরিবর্তন করে। রাতের আঁধারে ঘাটে কোনো লোকবল ও পর্যাপ্ত বাতি থাকে না। যার কারণে পন্টুনের অবস্থান টের পাওয়া যায় না। এ কারণে প্রায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, বিআইডব্লিউটিএ একটি জিডি করেছে। তাঁরা লঞ্চঘাটে গিয়ে ঘটনার সত্যতা জানতে পারলেও লঞ্চ পাননি।