নারী খুনের পাঁচ ঘণ্টা পর আসামি 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত

চট্টগ্রাম নগরে এক নারী খুন হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় এই হত্যা মামলার এক আসামি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে নগরের বাকলিয়া থানার বলিরহাট কর্ণফুলী নদী এলাকায় কথিত এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ মোহাম্মদ আবদুর রউফ এই তথ্য জানান।

‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ব্যক্তির নাম শাহ আলম (৩২)। বন্দুকযুদ্ধের ঘটনার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আগে নগরে বুবলি আক্তার (২৭) নামের এক নারী খুন হন। এই খুনের ঘটনায় শাহ আলম জড়িত ছিলেন বলে দাবি পুলিশের। তিনি এই হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।

পুলিশের ভাষ্য, বুবলি ঘটনার দুই দিন আগে বলিরহাট এলাকায় বাবার বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন। এলাকায় হাসান নামের এক যুবকের সঙ্গে পূর্ববিরোধের জের ধরে গতকাল রাত ১০টার দিকে শাহ আলমসহ একদল যুবক বুবলির বাবার বাড়িতে হামলা চালান। বুবলির ছোট ভাই রুবেলের বন্ধু হাসান। হামলাকারী যুবকেরা বাড়িটিতে ঢুকে রুবেলের দিকে অস্ত্র তাক করেন। হাসান কোথায়, তা জানতে চান তাঁরা। হাসানকে রুবেল বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছেন বলে দাবি করেন যুবকেরা। রুবেল এ সম্পর্কে কিছু জানেন না বললে যুবকেরা তাঁকে গুলি করতে উদ্যত হন। এ সময় ভাইকে বাঁচাতে বুবলি যুবকদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁর মাথা লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই বুবলির মৃত্যু হয়। বুবলির দুটি শিশুকন্যা রয়েছে।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ মোহাম্মদ আবদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, বুবলি হত্যার ঘটনায় রাতেই মামলা হয়। বুবলির বাবার বাড়ির পাশের একটি বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, বাড়িটি থেকে দুই হাতে দুটি পিস্তল নিয়ে বেরিয়ে আসছেন শাহ আলম। তিনি কয়েকটি গুলি করে পালিয়ে যাচ্ছেন। সঙ্গের যুবকদের প্রত্যেকের হাতে অস্ত্র ছিল।

অতিরিক্ত উপকমিশনার জানান, গতকাল রাতে শাহ আলম ও তাঁর সহযোগীদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালায়। গোপন সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, শাহ আলম বলিরহাট কর্ণফুলী নদী এলাকায় অবস্থান করছেন। পুলিশে সেখানে গেলে শাহ আলমের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষায় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে সেখানে একজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। লাশের পকেটে থাকা কাগজপত্র দেখে নিহত ব্যক্তি শাহ আলম বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে দুটি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুবলির লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বন্দুকযুদ্ধে নিহত শাহ আলমের লাশ উদ্ধার করে একই মর্গে পাঠানো হয়েছে।

আগের দিন শুক্রবার রাতে এক ঘণ্টার ব্যবধানে নগরে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটে। এদিন রাত নয়টার দিকে আকবর শাহ থানার কাট্টলি এলাকায় সন্ধ্যা রানী (৬০) নামের এক নারীকে বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাত ১০টার দিকে নগরের মুরাদপুর এলাকায় মোস্তাক আহমেদ (৪০) নামের এক দোকানিকে নিজ দোকানের সামনে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।