আগুনে শিশুসহ নিহত ২, সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ

আগুন। প্রতীকী ছবি
আগুন। প্রতীকী ছবি

কক্সবাজার শহরের কলাতলীর লাইটহাউস পাহাড়ে ঘরে আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছেন শিশুসহ এক ব্যক্তি। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, সাবেক স্বামী আবদুল মোনাফ ছেনুয়ারা নামে এক নারীর ঘরে আগুন দেন।

আগুনে ছেনুয়ারার দ্বিতীয় স্বামী আতিকুর রহমান (৪০) নিহত হন। সঙ্গে মারা যায় ছেনুয়ারা ও মোনাফের মেয়ে সাদিয়া (৬)। নিহত আতিকুর রহমানের বাড়ি মহেশখালীর শাপলাপুর গ্রামে। কক্সবাজার শহরে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক (টমটম) চালাতেন আতিক।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, লাইটহাউস পাহাড়ের একটি ঘরে আতিকুর, ছেনুয়ারা ও সাদিয়া থাকতেন।

ছেনুয়ারার অভিযোগ, সাবেক স্বামী আবদুল মোনাফ শত্রুতা করে রাতে তাঁর বসতবাড়িতে পেট্রল ঢেলে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে ঘরের ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা স্বামী আতিকুর রহমান ও মেয়ে সাদিয়া আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আগুন দেওয়ার আগে ঘরের দরজায় তালা লাগানো হয়। যেন ঘরের ভেতর থেকে কেউ বের হতে না পারে। আগুন দেওয়ার সময় তিনি রান্নাঘরে ডিম ভাজছিলেন। এ জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।

ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ছয় বছর আগে সাদিয়া গর্ভে থাকা অবস্থায় আবদুল মোনাফের সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এরপর দুই বছর আগে তিনি আতিকুর রহমানকে বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করেন। আতিককে বিয়ে করায় ক্ষুব্ধ হন আবদুল মোনাফ। এ জন্য প্রায় সময় তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিতেন মোনাফ। এ নিয়ে একাধিকবার সালিস বৈঠকও হয়েছিল।

কক্সবাজার দমকল বাহিনীর সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, রাত ১০টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ঘরের ভেতরে বাবা ও মেয়ের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পারিবারিক কলহের জের ধরে আগুনের সূত্রপাত বলে জানা গেছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়ে মানতে না পেরে সাবেক স্বামী আবদুল মোনাফ ছেনুয়ারার ঘরে আগুন দিয়েছেন। সেই আগুনে ছেনুয়ারার বর্তমান স্বামী আতিকুর রহমান ও মেয়ে সাদিয়ার মৃত্যু হয়েছে। ছেনুয়ারা বাদী হয়ে তাঁর সাবেক স্বামী আবদুল মোনাফ ও আবু ছালেহ নামের দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন।

ওসি ফরিদ উদ্দিন বলেন, আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে। মোনাফের বাড়ি মিয়ানমারে। ১২ বছর আগে তিনি বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করে পাহাড়ে বসতি শুরু করেন।