ধর্ষণের মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকির অভিযোগ

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলা তুলে নিতে বাদীকে অব্যাহত হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মামলার একমাত্র আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এতে করে মেয়েটির পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

আসামির নাম মো. মোস্তফা (৩৫)। তিনি একই উপজেলার কানাই গ্রামের বাসিন্দা ও পেশায় ব্যবসায়ী।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলার এজাহার থেকেজানা গেছে, ওই তরুণী (১৮) প্রায় দেড় বছর ধরে মোস্তফার বাড়িতে থেকে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। সেই সুযোগে মোস্তফা মেয়েটিকে বিভিন্ন সময়ে প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে আসছিলেন। ইতিমধ্যে তরুণীটি ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। বিষয়টি টের পেয়ে মোস্তফা এ নিয়ে কাউকে কিছু না বলতে বারণ করেন এবং তরুণীকে গর্ভপাত ঘটাতে বলেন। কিন্তু গৃহকর্মী তাতে রাজি হননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোস্তফা মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁকে মাসখানেক আগে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। মেয়েটি বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কাছে বিষয়টি খুলে বলেন। এলাকায় জানাজানির পর গ্রাম্য কয়েকজন মাতবর তা সমাধানের চেষ্টা করেন। মাতবরেরা বিচার হিসেবে মেয়েটিকে কিছু টাকা দিয়ে সমাধান করতে চান। তাঁরাও গর্ভপাত ঘটাতে মেয়েটিকে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের চাপ দেন। কিন্তু ওই নারী ও তাঁর পরিবার তাতে রাজি হয়নি। শেষে মেয়েটির বাবা গত ২১ এপ্রিল স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুল মতিনের কাছে গেলে চেয়ারম্যান তাঁকে আইনি ব্যবস্থা নিতে থানা-পুলিশের কাছে পাঠান। পরদিন মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। কিন্তু পুলিশ গতকাল রোববার পর্যন্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

এ নিয়ে মেয়েটি ও তাঁর বাবা গতকাল সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার না করায় আসামি ও তাঁর পক্ষের লোকজন মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশসহ অব্যাহত হুমকি দিচ্ছেন। এতে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। মেয়েটির বাবা বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাই। দুই সন্তানের বাবা হয়েও মোস্তফা আমার মেয়েটির সর্বনাশ করল। এখন সে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’

মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় এ বিষয়ে মোস্তফার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গাওকান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুল মতিন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে এলাকায় অনেক হইচই হয়েছে। সবকিছু শুনে আমি মেয়েটি ও তাঁর বাবাকে আইনি পদক্ষেপ নিতে থানায় পাঠিয়েছিলাম। ডিএনএ পরীক্ষা করলেই মেয়ের গর্ভজাত সন্তানের পরিচয় মিলবে।’