ইংরেজি প্রথম পত্রে কম নম্বর পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন

রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণিতে (ইংরেজি ভার্সনের একটি শাখা) ১ রোল নম্বর ছিল নাফিস সাদিক ভূঁইয়ার। বিদ্যালয়ের সব পরীক্ষায় সে ভালো ফল করত। ৬ মে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর দেখা যায় নাফিস ইংরেজি প্রথম পত্রে ৬৩ নম্বর পেয়েছে। অন্য সব বিষয়ে ‘এ‍ প্লাস’ (৮০-র বেশি নম্বর) পেয়েছে সে। এমনকি গণিতে ১০০-তে ১০০ পেয়েছে। সব মিলিয়ে জিপিএ-৫ পেলেও ইংরেজি প্রথম পত্রে এত কম নম্বর পাওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই মানতে পারছে না সে। তার পরিবারেরও একই প্রশ্ন মনে।

নাফিসের অভিভাবকেরা পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, শুধু সে একাই নয়, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী ইংরেজি প্রথম পত্রে গড়ে ৬০ বা এর সামান্য বেশি নম্বর পেয়েছে। কেউ পেয়েছে ৬৩, কেউ ৬০ বা ৬১, কারও নম্বর ৬২, ৬৪, ৬৬ । অথচ অন্যান্য বিষয়ে তাদের সবার নম্বর ন্যূনতম ৮০। শ্রেণিতে মেধাতালিকায় সব সময় ওপরের দিকে থাকত তারা। এসএসসির ফলে ইংরেজিতে কম নম্বর পাওয়ার বিষয়টি তারা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা বলেন, আইডিয়াল স্কুলের বাংলা ভার্সনের বহু শিক্ষার্থী যেখানে ইংরেজি প্রথম পত্রে ৯০-এর ওপরে নম্বর পেয়েছে, সেখানে শ্রেণিতে প্রথম দিকে থাকা ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে এত খারাপ করার কোনো কারণ থাকতে পারে না। তাঁদের আশঙ্কা, এসব শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র মূল্যায়নে কোনো গলদ হয়েছে। এ জন্য তাঁরা এসব খাতা পুনর্মূল্যায়ন চান।

 আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষও ১৬ জন শিক্ষার্থীর নাম ও রোল নম্বর উল্লেখ করে তাদের ইংরেজি প্রথম পত্রের উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়ন করার জন্য ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে অনুরোধ করেছেন অধ্যক্ষ।

অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ইংরেজি প্রথম পত্রে মেধাবী শিক্ষার্থীরা অস্বাভাবিক কম নম্বর পাওয়ায় বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বোর্ডকে অনুরোধ করেছেন তিনি।

যদিও বোর্ডের আইনানুযায়ী, খাতা পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ নেই। পুনর্নিরীক্ষার সুযোগ আছে। এর মানে হলো, উত্তরপত্রের নম্বরে যোগ-বিয়োগে ভুল থাকলে সেটা ঠিক করা যায়। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেছেন, এই খাতাগুলো যাতে খুব ভালোভাবে পুনর্নিরীক্ষণ করা হয়, সেটি তাঁরা করবেন।

নাম না প্রকাশের শর্তে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন, তাঁর ধারণা যে পরীক্ষক ওই খাতাগুলো মূল্যায়ন করেছেন, তিনি হয়তো ভালোভাবে খাতা দেখেননি।