ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চেয়ে শিক্ষকের আবেদন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছেন সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মাইদুল ইসলাম। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরীর কাছে এই লিখিত আবেদন জানান।

লিখিত আবেদনে মাইদুল ইসলাম বলেন, তিনি ক্যাম্পাসের খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষক ভবনে থাকেন। গত রোববার সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে ভবনের সামনের খোলা জায়গায় ১০ থেকে ১২ জনের একটা দল তাঁর নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে রাতে আনুমানিক ৯টার দিকে তাঁর বাসার দরজায় কয়েকবার লাথি মারা হয়। এ অবস্থায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি জানার পর সেখানে সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্রকে পাঠানো হয়। ওই ভবনে থাকা আরও কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গ কথা বললে তাঁরা এ ধরনের কিছু শুনেননি বলে জানান। এ ছাড়া ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজে কাউকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে শিক্ষক মাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, যেসব শিক্ষক ভবনে থাকেন, তাঁরা হয়তো নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কিছু বলতে চান না। তবে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বলেও জানান তিনি।

গত বছর কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করেন শিক্ষক মাইদুল ইসলাম। আন্দোলনকারীদের পক্ষ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে গত বছরের ২৩ জুলাই চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইফতেখারুল ইসলাম। ক্যাম্পাস শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ইফতেখার। কোটা সংস্কারের পক্ষে লেখালেখি করায় মাইদুল গত বছরের ১৪ জুলাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হুমকি দেন। পরদিন ১৫ জুলাই তিনি নিরাপত্তার কারণে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের উসকানি ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগ ওই বছরের ১৭ জুলাই শিক্ষক মাইদুল ইসলামকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা। ছাত্রলীগের হুমকির কারণে ২৩ জুলাই ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের কাছে লিখিত আবেদন করেন মাইদুল। ওই দিন রাতেই তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ দাবি করে, কটূক্তি করায় বিচারের জন্য মামলা হয়েছে। এরপর তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন।