ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ১০ মাস পর, পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ

আংশিক কমিটি ঘোষণার প্রায় ১০ মাস পর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আজ সোমবার বিকেলে সংগঠনটির ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন। দুপুরে অনুমোদিত কমিটির তালিকা নিয়ে গণভবনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন।

গত বছরের ১১ মে ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনের পর কমিটি ঘোষণার নিয়ম থাকলেও শীর্ষ পদের নেতৃত্ব বাছাইয়ে সময় নেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনের আড়াই মাস পর ৩১ জুলাই সংগঠনটির শীর্ষ দুই নেতার নাম ঘোষণা করা হয়৷

কমিটিতে পদপ্রাপ্তরা হলেন
৩০১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির ১ নম্বর সহসভাপতি হয়েছেন আল নাহিয়ান খান জয়। এই পদে মোট ৬১ জন রয়েছেন৷ ১ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন মামুন বিন সাত্তার। এ পদে মোট ১১ জন রয়েছেন। ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন লেখক ভট্টাচার্য। এ পদেও মোট ১১ জন রয়েছেন৷

প্রচার সম্পাদক হয়েছেন শফিকুল আলম রেজা, তাঁর সঙ্গে উপ-প্রচার সম্পাদক পদে রয়েছেন সাতজন। দপ্তর সম্পাদক হয়েছেন আহসান হাবীব, তাঁর সঙ্গে উপ-দপ্তর সম্পাদক পদে রয়েছেন পাঁচজন। গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে রয়েছেন আবু হাসনাত সরদার হিমেল, তাঁর সঙ্গে গ্রন্থনা ও প্রকাশনা উপসম্পাদক পদে আছেন চারজন।

শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক পদে আছেন আবদুল্লাহ আল মাসুদ লিমন, তাঁর সঙ্গে শিক্ষা ও পাঠচক্র উপসম্পাদক পদে রয়েছেন চারজন। সাংস্কৃতিক সম্পাদক হয়েছেন খালিদ হাসান রবিন, তাঁর সঙ্গে সংস্কৃতিবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন ছয়জন।

সমাজসেবা সম্পাদক হয়েছেন শেখ স্বাধীন শাহেদ, তাঁর সঙ্গে সমাজসেবা–বিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন চারজন। ক্রীড়া সম্পাদক পদে রয়েছেন আল-আমিন সিদ্দিক সুজন, তাঁর সঙ্গে ক্রীড়াবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন তিনজন। আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে আছেন মো. রাকিনুল হক চৌধুরী, তাঁর সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন পাঁচজন।

পাঠাগার সম্পাদক পদে রয়েছেন জাভেদ হোসেন, তাঁর সঙ্গে পাঠাগার উপসম্পাদক পদে আছেন চারজন। তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে রয়েছেন পল্লব কুমার বর্মণ, তাঁর সঙ্গে তথ্য ও গবেষণা উপসম্পাদক পদে আছেন তিনজন।

অর্থ সম্পাদক পদে আছেন মো. রাকিব হোসেন, তাঁর সঙ্গে উপ অর্থ সম্পাদক পদে আছেন চারজন। আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে রয়েছেন ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত, তাঁর সঙ্গে আইনবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন চারজন। পরিবেশ–বিষয়ক সম্পাদক পদে আছেন শামীম পারভেজ। তাঁর সঙ্গে পরিবেশ–বিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন তিনজন।

স্কুলছাত্রবিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন পুতুল চন্দ্র রায়, তাঁর সঙ্গে স্কুলছাত্রবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন তিনজন। বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন সাদুন মোস্তফা, তাঁর সঙ্গে বিজ্ঞানবিষয়ক উপসম্পাদক পদে রয়েছেন চারজন।

তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন শাকিল আহমেদ জুয়েল বাবু, তাঁর সঙ্গে তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন পাঁচজন। ধর্মবিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন তাজ উদ্দিন, তাঁর সঙ্গে ধর্মবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন চারজন।

গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন আবদুল্লাহ হীল বারী, তাঁর সঙ্গে গণশিক্ষাবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন তিনজন। ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক পদে আছেন ইমরান জমাদ্দার, তাঁর সঙ্গে ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন চারজন।

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা–বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন শাহরিয়ার ফেরদৌস হিমেল, তাঁর সঙ্গে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা–বিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন চারজন। গণযোগাযোগ ও উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক পদে আছেন শেখ শামিম তূর্য, তাঁর সঙ্গে গণযোগাযোগ ও উন্নয়নবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন চারজন।

সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন আসিফ তালুকদার, তাঁর সঙ্গে সাহিত্যবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন তিনজন। নাট্য ও বিতর্ক সম্পাদক পদে রয়েছেন জুয়েল মোল্লা, তাঁর সঙ্গে নাট্য ও বিতর্কবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন তিনজন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়–বিষয়ক সম্পাদক আসিফ ইকবাল অনিক, তাঁর সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়–বিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন পাঁচজন৷

আপ্যায়ন সম্পাদক পদে রয়েছেন আশরাফুল ইসলাম ফাহাদ, তাঁর সঙ্গে আপ্যায়ন–বিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন চারজন। মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন মেহেদী হাসান তাপস, তাঁর সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণাবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন তিনজন।

মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন নাহিদ হাসান শাহিন, তাঁর সঙ্গে মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন চারজন। ছাত্রবৃত্তিবিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন আতাউল গণি কৌশিক, তাঁর সঙ্গে ছাত্রবৃত্তিবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন চারজন।

কৃষিশিক্ষা–বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন মাকসুদুর রহমান মিঠু, তাঁর সঙ্গে কৃষিশিক্ষাবিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন তিনজন। কর্মসূচি ও পরিকল্পনা–বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন সাদ্দাম হোসেন, তাঁর সঙ্গে কর্মসূচি ও পরিকল্পনা–বিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন চারজন।

প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন হায়দার মো. জিতু, তাঁর সঙ্গে প্রশিক্ষণবিষয়ক উপসম্পাদক পদে তিনজন। কর্মসংস্থান–বিষয়ক সম্পাদক পদে আছেন মো. রনি, তাঁর সঙ্গে কর্মসংস্থান–বিষয়ক উপসম্পাদক পদে আছেন চারজন। এ ছাড়া, সহসম্পাদক পদে রয়েছেন ৪৭ জন আর সদস্য পদে রয়েছেন ১২ জন।

পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ
ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের এ কমিটিতে অছাত্র, ছাত্রদলের কর্মী, বিবাহিত ও বিতর্কিতদের স্থান দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে বিক্ষোভ করছেন পদবঞ্চিত ও কাঙ্ক্ষিত পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা৷ কমিটি ঘোষণার পর সন্ধ্যা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের কর্মী-সমর্থকেরা মধুর ক্যানটিনে আসতে থাকেন৷

‘বিতর্কিত কমিটি, মানি না মানব না’, ‘আমার পরিশ্রম, বৃথা যেতে দেব না’ ইত্যাদি স্লোগানে তাঁরা মধুর ক্যানটিন মুখরিত করে তোলেন। কিছুক্ষণ পর সেখানে এসে অবস্থান নেন পদ পাওয়া নেতাদের একটি অংশের কর্মী-সমর্থকেরা৷ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মধুর ক্যানটিনে তাঁদের পাল্টাপাল্টি স্লোগান চলছে৷